বিয়ানীবাজার পৌরশহরের যতটুকু সৌন্দর্য ছিল তা হারিয়েছে প্রধান সড়কে মাছ ও সবজি বাজার বসার পর থেকে। ময়লা আর্বজনার স্তুপ, দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশপাশি ওই অংশে সারা বছর কাদায় একাকার হয়ে থাকে। কিন্তু মাছ ও সবজি বাজার নিয়ে অন্য ধরনের ‘রাজনীতি’ চলমান থাকায় দায়িত্বশীলদের কোন উদ্যোগই সফল হচ্ছে না।

পৌর মার্কেট নির্মাণ করার লক্ষে ২০১৫ সালে মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীদের মার্কেট নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত সড়কের পাশে অস্থায়ীভাবে বেচাকেনার জায়গা তৈরী করে দেয়া হয়। কিন্তু পৌর মার্কেটের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও ব্যবসায়ীরা অস্থায়ী বাজার থেকে সরে যেতে যাচ্ছেন। এতে পুরো শহরই ময়লার বাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

সম্প্রতি পৌর মেয়র আব্দুস শুকুর সবজি ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে তাদের পৌর মার্কেটের নির্ধারীত স্থানে যেতে সম্মত করেছেন। ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনাকালে পৌরসভার দায়িত্বশীল কাউন্সিলর, সবজি ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ব্যবসায়ীরা নেতারা অংশ নেন।

একই পন্থা অবলম্বন করে মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন দায়িত্বশীলরা। পৌর মেয়র আব্দুস শুকুরও আশাবাদী মাছ ব্যবসায়ীরা পৌর মার্কেটের নির্ধারীত স্থানে যেতে সম্মত হবেন।

সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সাথে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা করেন মৎস্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। এ সময় মাছ বাজারসহ ব্যবসায় প্রতিবন্দক অনেক বিষয়ে তারা আলোচনা করেন। মন্ত্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করার নির্দেশ দেন এবং ব্যবসায়ীদের আশ্বস্থ করেন তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার হবে না।

এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু সবজি ব্যবসায়ীদের বাগে আনতে না পেরে কিছু সংখ্যক সরকার দলীয় নেতা মাছ ব্যবসায়ীদের নিয়ে পরিস্থিতি জটিল করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। তাদের সাথে যুক্ত রয়েছে সাবেক এক/দুইজন জনপ্রতিনিধিও। নিজেদের কর্তৃত্ব ঠিকিয়ে রাখতে এবং দায়িত্বশীলদের বেকায়দায় ফেলতে তারা শহরকে অপরিচ্ছন্ন নোংরা শহরের তকমা লাগিয়ে দিতে চাচ্ছেন।

এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, মেয়র মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে তাদের সরোচ্চ সুযোগ সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দেন। তাদের তিনি কথা দিয়েছেন- সকল ধরনের সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি মাছ বাজার ছাড়া অন্য কোথাও মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীরা ব্যবসা সাজাতে পারবেন না। মেয়রের আশ্বাসে ব্যবসায়ীরা সহযোগিতার মনোভাব পোষণ করলেও আমাদের কিছু নেতার কারণেিএ প্রক্রিয়া থমকে আছে। ওই নেতা নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতির বড় নেতারা যেসব গর্ত তৈরী করছেন- এসব গর্তে এক সময় তাদেরকে পড়তে হতে পারে। তখন গর্তের ময়লায় ডোবা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় থাকবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এদের নাম বলে কি হবে। তবে সময় হলে এমনিতে এদের মূখোশ উন্মোচিত হবে। তাদেরকে সবাই চেনে। এরা দিনের বেলায় বিরোধীতা করে আর রাতে বেলা এক টেবিলে বসে ভাল মানুষদের নিয়ে চক্রান্ত করে।

পৌর মেয়র আব্দুস শুকুর বিয়ানীবাজার নিউজ ২৪কে বলেন, মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদেরকে আমরা আশ্বস্থ করেছি- আমাদের সাধ্যের মধ্যে যতটুকুর করণীয় আমরা তা করবো। তাদের স্বার্থক্ষুন্ন অন্তত আমাদের কারণে হবে না। তাদের দেয়া তালিকা অনুপাতে প্রকৃত মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোটা বরাদ্ধ দেয়া হবে।