গত ৩০ জুনের মধ্যে বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাইয়ে বিদ্যুতের পাওয়ার গ্রিড স্টেশনের নির্মাণ কাজ শেষে চালু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও সেটি চালু হয়নি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যথা সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে এ গ্রিড স্টেশনের  নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

চারখাই গ্রিড স্টেশন নির্মাণে প্রায় একশত কোটি টাকা ব্যয়ে হচ্ছে।  পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এই গ্রিড স্টেশনটি নির্মাণ করছে। আগামী ৩০ বছরের চিন্তা মাথায় রেখে নির্মাণাধীন গ্রিড স্টেশন প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ গ্রিড স্টেশন থেকে সিলেট জেলার ১৩ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের মার্চ মাসে বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাইয়ে একটি নতুন পাওয়ার গ্রিড স্টেশন নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৮০ এমবিএ ক্ষমতাসম্পন্ন এই গ্রিড স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ যাবে সিলেটের ১৩টি উপজেলায়। তবে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলাকে।

জানা যায়, সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এবং সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মাধ্যমে জেলার ১৩টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তন্মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জেলার ৮টি উপজেলায় এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ জেলার ৫টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে সিলেট নগরী ও আশপাশের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।

সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মাহবুবুল হক বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে আগামী ৩০ বছরের চিন্তা মাথায় রেখেই বিয়ানীবাজারের চারখাইয়ে গ্রিড স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। ৮০ এমবিএ ক্ষমতাসম্পন্ন এ গ্রিড স্টেশন নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় শত কোটি টাকা।’

তিনি বলেন, ‘গ্রিড স্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষের দিকে রয়েছে। বর্তমানে গ্রিড স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহে সংযোগ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। এ কাজ শেষে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্টেশনটি চালু করা যাবে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে সিলেটের কুমারগাঁও গ্রিড এবং ফেঞ্চুগঞ্জ গ্রিডের মাধ্যমে সিলেটের সকল উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কুমারগাঁও গ্রিড থেকে আট উপজেলায় এবং ফেঞ্চুগঞ্জ গ্রিড থেকে পাঁচ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তবে কুমারগাঁও গ্রিডে ওভারলোডের সমস্যা রয়েছে। প্রায় সময়ই এটি ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোড নিতে পারে না। এছাড়া কুমারগাঁও গ্রিড থেকে বিভিন্ন দূরবর্তী উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যয়সাপেক্ষ ও এতে সিস্টেম লসও হয়। বিয়ানীবাজারে গ্রিড স্টেশন নির্মাণের পেছনে এসব বিষয়ও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বিয়ানীবাজার জোনের ডিজিএম অভিলাস চন্দ্র পাল  বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ গ্রিড স্টেশন থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে।’