প্রবল বেগে কুশিয়ারা নদীর পানি ডাইক ভেঙ্গে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় দ্রুতগতিতে বাড়ছে পানি। ডাইক মেরামত না করলে মুহূর্তে তলিয়ে যাবে শেওলা ইউনিয়নের দক্ষিণএলাকাসহ আশপাশের গ্রাম। কুশিয়ারা নদীর ভেঙ্গে যাওয়া ডাইক মেরামত করতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতাসহ তার বন্ধু বান্ধব ও এলাকার উদ্যমি তরুণরা।

রোববার সকাল ১১টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা উদ্দিন কুশিয়ারা নদীর কাকরদিয়া এলাকায় ডাইক ভাঙ্গার খবর পেয়ে বন্ধু ও এলাকার সহকর্মীদের সাথে নিয়ে মেরামত কাজে হাত দেন। তাদের দেখাদেখি এগিয়ে আসেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন তরুণ। বাঁশ, বালি বস্তার এবং ইট দিয়ে দুই ঘন্টার কঠোর পরিশ্রমে তারা ডাইক মেরামত করেন। এতে লোকালয়ে প্রবেশ বন্ধ হয় কুশিয়ারা নদীর পানি।

অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী রাতে আঁধারে ডাইক ভেঙ্গে দেন নদীর তীরবর্তী গর্ত ও ফসলি জমি পলি মাটিতে ভরাট করার জন্য। বর্ষা মৌসুম শেষে শোকনো মৌসুমে এসব পলি মাটি তারা বিক্রি করেন। সামান্য মুনাফার জন্য অসাধু মাটি ব্যবসায়ীদের কারণে উপজেলার দুই লাখ মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তেরাদল এলাকার তরুণ ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফা উদ্দিন বলেন, সকালে ডাইক ভাঙ্গা দেখে এসে গ্রামের এক মুরব্বি আমাকে বিষয়টি জানান। এ খবর পেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধু, স্বজন ও প্রতিবেশিদের নিয়ে ডাইক মেরামত করা শুরু করি। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে বাঁশ কেটে নিয়ে ভাঙ্গা ডাইকে বাঁশের আড়া নেই এবং পরে বস্তায় বালি ভরে বাধ তৈরী করি। পরে পলি মাটি দিয়ে বাধের চুড়া বড় করে তার উপর ইট বিছিয়ে দিয়েছি। তিনি বলেন, গুটি কয়েক মানুষের কারণে পুরো উপজেলার মানুষ বন্যায় কবলিত। প্রশাসনের উচিত এদের খোঁজে বের করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া।

তেরাদল এলাকার তরুণ এস চৌধুরী হিরণ বলেন, গ্রামের তরুণরা ভাল একটি কাজ করেছেন। এ ডাইক মেরামত হওয়ায় বন্যা কবলিত হওয়া থেকে লাখো মানুষ রক্ষা পেয়েছেন। এরকম প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সবক্ষেত্রে তরুণদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের উচিত কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী ডাইকগুলো মেরামত ও সংস্কার কাজ করা।

এদিকে একমাস পূর্বের বন্যায় কুশিয়ারা নদীর শেওলা ইউনিয়নের আলীপুর ডাইক ভেঙ্গে গেলেও সেটি মেরামত করা হয়নি। ভাঙ্গা এ ডাইক দিয়ে লোকালয়ে প্রবল বেগে প্রবেশ করছে নদীর পানি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাইক মেরামত করা না হলে শেওলা ইউনিয়নের বেশিভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাইক মেরামত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করবে উপজেলা প্রশাসন।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর বলেন, ডাইকটি গত বন্যায় ভেঙ্গে পড়ার পর স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে মেরামত উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু স্রোতের কারণে মেরামত করা সে সময় সম্ভব হয়নি। ডাইকের বিষয়টি সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।