দিন দিন শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা বিয়ানীবাজার। প্রাচীনকাল থেকে অদ্যাবদি কৃষি, ব্যবসা ও প্রবাসী রেমিট্যান্সের উপর এখানকার অর্থনীতি নির্ভরশীল থাকলেও সম্প্রতি এই অঞ্চলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এতদাঞ্চলের প্রবাসী ও বিত্তবানরা।

কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের মেওয়া গ্রামে ২০১০ সালে গড়ে উঠে মতিন এগ্রো গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজ নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। বিয়ানীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ ঘেষে গড়ে উঠা এই প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন ও বিপনন শুরু করে ২০১৩ সালে। বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগ করেছেন এখানকারই স্থানীয় কয়েকজন প্রবাসী ও বিত্তশালী ব্যক্তি। এতে সুফল পাচ্ছেন পুরো বিয়ানীবাজারবাসী। শতাধিক বেকার যুবকদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ।

এদিকে, দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর বাড়ির পাশে চাকুরির সুযোগ পাওয়ায় খুশি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জানালেন নিজেদের স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প। প্রতিষ্ঠানের জৈষ্ঠ্য কর্মকর্তা আহমদ হোসেন সাহেদ ও হিসাবরক্ষক সাইদুল ইসলাম বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠায় আমাদের মতো তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমাদের মতো অনেকেই এখানে চাকুরী করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারছেন। এই জনপদে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে এখানকার প্রবাসী ও বিত্তবানদের উদ্যোগী হওয়া উচিত।

উপজেলার প্রথম শিল্প প্রতিষ্ঠান মতিন এগ্রো গ্রুপ অব ইন্ড্রাস্ট্রিজের দৈনিক উৎপাদন প্রায় ২ মেট্রিকট্রন। গুড়ো মশলা, সেমাই, মটরশুটি, চানাচুর, মটর, চিরাভাজা, মুড়ি, সরিষা তেল ও সিরকাসহ প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব পন্য রয়েছে প্রায় ৫০টির মতো। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও গুনগত মান বজায় রাখতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর রোটারিয়ান আনোয়ার হোসেন খান।

তিনি বলেন,  এই প্রতিষ্ঠানটির মতো এরকম বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়লে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে। আর তাই স্থানীয় বিত্তবানদের এই খাতে বিনিয়োগে আরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন আনোয়ার হোসেন খান। তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করলে অদূর ভবিষ্যতে শিল্পভিত্তিক গোছানো নগর হয়ে উঠতে পারে বিয়ানীবাজার।

রোটারিয়ান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, দেশ বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলেছে। এক্ষেত্রে গ্রামীণ এলাকাকে আরো উন্নত করতে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে সুসংহত করা জরুরি। আর তাই সমাজে ন্যায্যতা এবং সামাজিক উন্নয়নে বণ্টন ব্যবস্থার মান বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় চাকুরির সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি।

বিয়ানীবাজারে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে সফল ‘মতিন এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ’