দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীতে দেবী বিসর্জন শেষে কালাচাঁদ মন্দির প্রাঙ্গনে রীতি অনুযায়ী গান করা হয়। শনিবার রাত প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে দুর্গাপূজার শেষ আনুষ্ঠানিকতা ‘শান্তিজল’ চলাকালে এক হিন্দু যুবক বলছিরা হাতে নিয়ে কোন একজনকে খুন করার হুমকি দেয়। এ সময় কালাচাঁদ মন্দির প্রাঙ্গনে থাকা পূজারীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পুলিশের উপস্থিতিতে কালাচাঁদ পূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক অমিতাব পাল চৌধুরী উপস্থিত হিন্দু ধর্মের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিন যুবক এ মন্দির নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমি গত বছর একজনের নামে থানায় জিডি করেছি। এখন এ তিনজনের নামে প্রয়োজনে মামলা করবো।

স্থানীয়রা জানান, অলক নামের এক যুবক মদপ্য অবস্থায় কালাচাঁদ মন্দিরে প্রবেশ করে খুন করার হুমকি দেয়। তার হুমকি ও হাতে ধারালো অস্ত্র থাকায় উপস্থিত পূজারিদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় দশ মিনিটের মতো মন্দির প্রাঙ্গণে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করে। পরে পুলিশ আসার খবর শুনে অলকের সঙ্গীরা তাকে কোলপাজা করে ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অলকের সাথে অশীষ ও সুশান্ত নামের আরও দুই যুবক জড়িত বলে উপস্থিত লোকজন অভিযোগ করে।

কালাচাঁদ পূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক অমিতাব পাল চৌধুরী বলেন, তিন যুবক এখানে সমস্যা করেছে। পুলিশ আসায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এলাকার মুরব্বিরা বিষয়টি গ্রাম্যভাবে সালিশ বিচার করবেন জানিয়েছেন। আজ রবিবার সন্ধ্যায় বিচার হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে কি কারণে যুবকের ধারালো অস্ত্র নিয়ে উগ্র আচরণ- এ বিষয়ে একেকজন একেক রকম কথা বলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন কালাচাঁদ মন্দিরের দায়িত্ব রয়েছে মিহির বরণ পাল চৌধুরীর ছেলেদের কাছে। এ বিষয়টি স্থানীয় অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। মিহির বরণ পাল চৌধুরীর জীবিতবস্থায় মন্দিরের মূল দায়িত্বে তিনি থাকতেন। তিনি পরলোক গমন করলে তাঁর ছেলে অরুণাব পাল চৌধুরী মোহন এবং চলতি বছর অমিতাব পাল চৌধুরী দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। মূলত প্রমথ নাথ দাসের উত্তরসূরীদের হাত থেকে কালাচাঁদ মন্দিরের মূল দায়িত্ব সরিয়ে নিতে এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে পূজারিদের অনেকেই মনে করেন। গত কয়েক বছর থেকে মিহির বরণ পাল চৌধুরী ও তিমির বরণ পাল চৌধুরীর পুত্রদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছে। তাদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধের সুযোগ নিতে চাইছে একটি পক্ষ- এমন্তব্য জনৈক পূজারীর।

তবে স্থানীয় সকলেই এ বিষয়টি সালিশ বিচারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার পক্ষে থাকায় এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়নি।