দেড় মন ওজনের পা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪র্থ তলার বার্ন ইউনিটে (ব্রু ইউনিট) ১৫ নং- বেডে ভর্তি থাকা রাজিয়া বেগমের পায়ে অস্ত্রোপচারের জন্য বি-পজেটিভ গ্রুপের ৪০ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। ঢামেকের ব্লাড ব্যাংকে রক্ত সঞ্চিত হওয়ার পর তার পায়ে অস্ত্রোপচারের তারিখ ও সময় নির্ধারণ করা হবে।

বিরল রোগে আক্রান্ত হত দরিদ্র রাজিয়ার পরিবারের পক্ষে ৪০ ব্যাগ রক্ত ক্রয় করা সম্ভব নয়। তাই স্বেচ্ছায় রক্তদানকারীরা রাজিয়ার প্রাণ বাঁছাতে রক্ত দিয়ে মানবিক সহায়তার হাত প্রসারিত করবেন- দেশবাসীর কাছে এমনটাই আশা করছেন রাজিয়ার পরিবার।

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের এওলাতৈল গ্রামের দরিদ্র কৃষক মানিক মিয়ার স্ত্রী রাজিয়া বেগম (৪৫)। রাজিয়ার স্বামী মানিক মিয়া বলেন, ১৮ বছর আগে দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের সময় খেয়াল করি আমার স্ত্রীর ডান পা ফুলে যাচ্ছে। পা ফুলতে-ফুলতে এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতিমধ্যে ভিটামাটি হারিয়েছি। বর্তমানে তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হলে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিসকরা তার পায়ে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জটিল এই অপারেশনে ৪০ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। কিভাবে রক্তের ব্যবস্থা হবে সেই চিন্তায় এখন আর কিছুই ভাল লাগছেনা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানান, রাজিয়ার পায়ের রোগ নির্ণয়ে সরকারী খরছে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জটিল এই রোগের অস্ত্রোপচার করা হবে। তার পায়ে অস্ত্রোপচার করতে হলে প্রায় ৪০ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন রয়েছে। পর্যাপ্ত রক্ত হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে মজুদ রেখেই এই অপোরেশনের কাজ শুরু করতে হবে। রাজিয়ার জীবন বাঁছাতে ঢাকাসহ রক্তদাতা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন রাজিয়ার ছোট ভাই ইসলাম উদ্দিন। প্রয়োজনে এই মোবাইল নাম্বারে (০১৭৯৬-৪১৮২৫৬) যোগাযোগের অনুরোধ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, বিরল রোগে আক্রান্ত রাজিয়া বেগমকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিকবার সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সমাজের বিত্তবান ও আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় অবশেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন রাজিয়া। তাঁর চিকিৎসার ব্যয়ে আর্থিক সহযোগিতা ও জরুরী ভিত্তিত্বে ৪০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহের বিষয়ে রাজিয়ার হত দরিদ্র পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের সকল বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে।

উৎস- ডেইলি সিলেট