এই সময়ের ট্রেন্ডি পোশাক হিসেবে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বিপনী মার্কেটগুলোতে এবার তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে নানা বাহারি নামের আধুনিক  পোশাক। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ‘সারারা গারারা’ নামীয় সবধরনের ব্যতিক্রমী ও বিদেশি পোশাক। পোশাকের ভিন্নতা আনতে তরুণীদের অনেকেই ঝুঁকছেন মাল্টিলেয়ার্ড বা মারমেইড কাটের গাউন, লেহেঙ্গা ও সারারায়। এক রঙের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে কন্ট্রাস্টের দিকেই এবার সবার নজর।

তরুণী ক্রেতারা বলছেন, এখন ট্রেন্ডি পোষাকই সবার পছন্দ। হিপ থেকে ফিট হয়ে নেমে আসা এসব পোশাকে নিচের ঘের অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত, যা অনেকখানি মেঝেতে ছড়িয়ে থাকে। অনেকটা রূপকথার মৎস্যকন্যার লেজের মতো। এর সঙ্গে যোগ হতে পারে পিনটাক নেক অথবা এসিমেট্রিক কাটের চোলি আর ড্যাজলিং চুনরি।

মহামারি করোনার ২য় ধাপের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে চলছে তৃতীয় দফা ‘লকডাউন’। এরই মধ্যে আসন্ন ঈদকে ঘিরে জমে উঠেছে ব্যাংকের শহর হিসেবে পরিচিত প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বিপণিবিতানগুলো। করোনার ঝুঁকি নিয়েই ঈদ উদযাপনের লক্ষ্যে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বিয়ানীবাজারবাসী। বিপণিবিতানে পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে শেষ মুহূর্তে শপিংমলে ছুটছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।

এবারের ঈদ আয়োজনে পৌরশহরের ছোটবড় ও অভিজাত বিপণী বিতানসহ সবকটি দোকানেই তরুনীদের ফ্যাশনে চলমান ট্রেন্ডকেই গুরুত্ব দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের আগে থেকে প্রতিটি বিপনী শপে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে সারারা, গারারা, অন্তরা, আনারকলি, জিপসি, রংবাজ, পাখি, বেহুলা, ব্যাচেলর পয়েন্টের রুকেয়া, নাগিন, টিকটক, কুর্তি, হাউজফুলসহ নানা নামে অনেক ট্রেন্ডিং পোশাক। ট্রেন্ডের টানে তরুণীরা ছুটে আসছেন শপিংমলে। এতে বেচাবিক্রি বাড়ায় বিক্রেতাদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।

বিপনী মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের বেশিরভাগই মধ্য মানের বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। শুধু ট্রেন্ডই নয়, রেডি এবং আনরেডি উভয় ধরনের দেশি-বিদেশি ডিজাইনের ড্রেস বিক্রিও কম নয়।

নতুন নতুন বাহারি নামের বিদেশি পোশাকে মেয়েরা মেতে উঠলে ঈদের কেনাকাটা থেকে ছেলেরাও পিছিনেই নেই। নতুন পাঞ্জাবি ছাড়া ছেলেদের ঈদ যেন ঠিক জমে না। এই একটিমাত্র পোশাক, যেটা ছেলেদের গায়ে জড়াতেই উৎসবের দিকে টেনে নিয়ে যায়। বাঙালির এই চিরাচরিত ঐতিহ্যকে ধরেই ঈদ উপলক্ষে ফ্যাশন হাউজগুলোতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি। পাশাপাশি ছেলেদের পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি দোকানেই চলছে ছেলেদের জিন্স প্যান্ট ও শার্ট বিক্রি ধুম।

এদিকে, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই ঈদের কেনাকাটায় দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। প্রথমদিকে মার্কেটগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকলেও গত ৩-৪ দিনে ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপণিবিতানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটা করতে ক্রেতারা বিভিন্ন বিপণিবিতানে ছুটে চলেছেন। বিপণিবিতানগুলোগুলোতে সুরক্ষা ব্যবস্থার যেমন অভাব, তেমনি অনেকেই মানছেন না সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি। এছাড়া কোনো দোকানেই চোখে পড়েনি হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার। আবার স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীনতা রয়েছে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের মধ্যেও। অনেকে আবার করোনার ঝুঁকিতে শিশুদের নিয়ে আসছেন কেনাকাটা করতে। একই চিত্র দেখা গেছে, উপজেলার চারখাই, দুবাগ, বৈরাগীবাজার ও বারইগ্রাম বাজারের বিভিন্ন বিপণিবিতানগুলোতেও। বেশিরভাগ বিপণিবিতানে নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি থাকলেও অনেকে আবার পরিবার-পরিজন এমনকি শিশুদের সঙ্গে নিয়েও কেনাকাটা করতে এসেছেন।

সবমিলিয়ে বলতে শেষ মুহূর্তে বেচাকেনা জমে উঠের খুশি বিক্রেতারা। তারা বলছেন গতবছর এবং এবারের প্রথমদিকের লকডাউনের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেবার সুযোগ এবার।

বিয়ানীবাজারে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় তরুণীদের পছন্দ 'সারারা'