ফ্রান্সে করোনার প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করছে। প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। তাই কঠিন এ মহামারি রোধে আবারও পুরো দেশ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে অনেক দেশেই নতুন করে লকডাউন জারি করা শুরু হয়েছে। তবে করোনা সংক্রমণের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স এখন অন্যতম। ফলে এবার নতুন করে স্কুল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

বুধবার (৩১ মার্চ) রাত ৮ টায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোন টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এ ঘোষণা দেন।
ঘোষণা মোতাবেক আগামী ৩ এপ্রিল শনিবার থেকে পুরো ফ্রান্স মেট্রোপলিটন জুড়ে লকডাউন চলবে। এর আগে ১৯ টি ডিপার্টমেন্ট লকডাউন ছিল কিন্তু নতুন ঘোষণা হিসেবে পুরা ফ্রান্স ৪ সপ্তাহের জন্য লকডাউনের আওতায় থাকবে।

এ লকডাউনের আওতায় উল্লেখযোগ্য বিধি-নিষেধের মধ্যে রয়েছে-(১) বিশেষ কারণ ছাড়া ১০ কিলোমিটারের বেশী ভ্রমণ করা যাবে না, তবে একান্ত পরিহার্য কারণে বাসস্থান থেকে সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণ করা যাবে। যথারীতি সন্ধ্যা ৭ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত সারাদেশে কারফিউ বলবৎ থাকবে। (২) ইস্টার হলিডেতে শনি -রবিবার-(উইকেন্ডে) এক রিজিওন থেকে অন্য রিজিওনে ভ্রমণ করা যাবে। (৩) যে সকল ফরাসি নাগরিক এবং ফ্রান্সের রেসিডেন্ট পার্মিট হোল্ডার বর্তমানে ফ্রান্সের বাহিরে আছেন তারা যেকোনো সময় ফ্রান্সে ফিরতে পারবেন। (৪) Les crèches, écoles, collèges et lycées ২ এপ্রিল শুক্রবার থেকে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

(৫) স্কুল বন্ধ থাকার কারণে যে সকল মা-বাবা বাসায় বাচ্চাদের দেখাশুনা করবেন এবং উক্ত কারণে যারা télétravailler করতে পারবেন না। তারাও খণ্ডকালীন বেকার ভাতা (chômage partiel) পাবেন। এছাড়া les salariés et les commerçants, les indépendants, les entrepreneurs et les entreprises, tous les dispositifs -সবাই আর্থিক সুবিধা পাবেন।
(৬) ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম আরো জোরদার করার জন্য প্রয়োনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে ৬০ বছরের উপরের বয়সীদের ১৬ এপ্রিলের মধ্যে, ৫০ বছরের উপরের বয়সীদের ১৫ মে এর মধ্যে, ৫০ বছরের নিচে বয়সীদের ১৫ জুনের মধ্যে এবং সামারের শেষে দিকে ১৮ বছর বয়স উর্দ্ধ ফ্রান্সের সকলকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে বলে প্রেসিডেন্ট আশ্বস্থ করেন। (৭) কালচারাল সেন্টার,বার, রেস্তোরাঁ, কফি শপ, স্পোর্টস সেন্টার, বড় শপিং সেন্টার এসবগুলি আগামী মে মাসের মাঝামাঝির পূর্বে আর খোলা হবে না। (৮) lits de réanimation (intensive care beds) ৭,৬৬৫ থেকে ১০ হাজারে বর্ধিত করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে মার্চের শুরুর দিকে ফ্রান্সের ১৬টি অঞ্চলে লকডাউন জারি করা হয়। এবার তা বাড়িয়ে পুরো দেশে করা হয়েছে। গত বছর মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে যা দেশটিতে তৃতীয়বারের মতো লকডাউন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ দশমিক ৬ মিলিয়নের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৫ হাজার ৪৯৫ জন।

বিয়ানীবাজার উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে ABtv'র কুইজ প্রতিযোগিতা, জিতে নিন আকর্ষণীয় পুরস্কার