বিয়ানীবাজার নিউজ ২৪। ১৪ মার্চ ২০১৭।

ফেঞ্চুগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বক্তারা ভোট দেবার সময় প্রার্থী রাজাকার মুক্ত কি না তা যাচাই করার আহবান জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার উপজেলার ডাকবাংলো মাঠে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক এবিএম কিবরিয়া ময়নুলের পরিচালনায় ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সভাপতি এস এম বদরুল ইসলামের সভাপতিত্ব সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথিবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট লুৎফুর রহমান, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য এ জেড রওশন জেবিন রুবা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের শোক প্রস্তাব পেশ করে সুরা ফাতিহা পড়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে ফেঞ্চুগঞ্জের শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের নাম উল্লেখ করে স্মরণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।

এসময় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল লতিফ, আলা উদ্দীন আলাই পীর, নুরুল হোসেন চঞ্চলসহ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

স্বাগত বক্তব্যে ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের প্রাক্তন ভিপি সাংবাদিক শাহ মুজিবুর রহমান জকন ফেঞ্চুগঞ্জের রাস্তা ঘাটের দুরবস্থা তুলে ধরে বলেন- কার ইশারায় ফেঞ্চুগঞ্জকে আফ্রিকা বানিয়ে রাখা হয়েছে তা এখন দেখার সময়। আগামীতে সঠিক ব্যক্তি না পেলে সিলেট-৩ আসনে নির্বাচন বয়কটের আহবান জানান তিনি। এসময় উপস্থিত জনতা সমর্থন জানান।

অতিথিদের বক্তব্যে শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন- আপনাদের এত অভিযোগ, ক্ষোভ জমা আছে তা এখানে না আসলে বুঝতে পারতাম না। আপনারা এখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, রাজাকারের রক্তের বিপক্ষে পরিষ্কার অবস্থান নিন আমাদের সর্বাত্মক সহযোগীতা থাকবে। এদেশে রাজাকারের বিচার হচ্ছে আরো হবে। রাজাকারের বংশধর আলবদর শামস বাহিনীর অনুসরণকারী আওয়ামীলীগে স্থান পাবেনা। আগামী প্রতিনিধি সম্মেলনে এ ব্যাপারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মুলবক্তা মিসবাহ উদ্দীন সিরাজ বলেন- আপনাদের দুঃখ, ক্ষোভ শুনে মর্মাহত হয়েছি। আপনারা আমাকে সিলেট-৩ আসনে চাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে অনুমতি দিলে আমি আপনাদের নিয়ে নির্বাচন করব।

দক্ষিন সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহেদ বলেন- ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে সবার আগে রাজাকার মুক্ত হতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের সহকারী এটর্নি জেলারেল আব্দুর রকিব মন্টু উনার উপর দাঙ্গা হামলার কথা তুলে বলেন- এ যেন আওয়ামীলীগ নয় কোন জমিদারের রাজত্ব চলছে। তিনি মিসবাহ উদ্দীন সিরাজের হাতকে শক্তিশালী করে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, কার কোন ইশারায় এত বছর যাবত ফেঞ্চুগঞ্জে নির্বাচন আটকে আছে? তিনি আইনি সমাধানে কাজ করে যাচ্ছেন শিগগিরই এ নির্বাচনের জট খোলবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভোট দেবার সময় প্রার্থী রাজাকার মুক্ত কি না তা যাচাই করবেন।

আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক  মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আখলাকুর রহমান চৌধুরী সেলিম, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসিত টুটুল।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- মোগলা বাজার ইউপি চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম শাইস্তা, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রইস আলী, এডিশনাল পিপি এডভোকেট শামসুল ইসলাম, ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার বনিক সমিতির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সাংগঠনিক সম্পাদক শিব্বির আহমেদ, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক শাহিল আহমেদ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা প্রাক্তন সভাপতি সাব্বির আহমেদ।

সমাপনি বক্তব্যে অনুষ্ঠানের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের সভাপতি এস এম বদরুল ইসলাম বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ সহ প্রত্যাক উপজেলায় রাজাকারদের নাম ফলক করা হোক যাতে প্রজন্মরা জানতে পারে কে কারা এ দেশের শত্রু। সেই সাথে রাজাকারদের জল্লাদখানা ও বধ্যভূমি কাইয়ার গোদামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্থম্ভ নির্মানের জোর দাবি জানান।