ফেঞ্চুগঞ্জ শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরির যেন অশনি পিছু ছাড়ছে না! আবারও গ্যাস সঙ্কটের কারণে বন্ধ হল সার উৎপাদন। গত ৪০ দিন ধরে উৎপাদন বিহীন শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি প্রতিদিন গুনছে ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি। কিন্তু আবার কবে এটিতে উৎপাদন শুরু হবে এ ব্যাপারেও নিশ্চিত নন কর্মকর্তারা।

শাহজালাল সারকারখানা সূত্রে জানা যায়, গ্যাস সঙ্কটের কারণ দেখিয়ে গত ২৩ এপ্রিল সার কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর উৎপাদন শুরু হয়নি। প্রতিদিন ১৭৬০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন এই কারখানা বন্ধ হওয়ার পূর্বে প্রতিদিন গড়ে ১৪৫০ মেট্রিক টন করে ইউরিয়া উৎপাদন হয়।

প্রায় ৪০ দিন বন্ধ থাকায় এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার মেট্রিক টন সার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। প্রতি টন সার বিক্রি হয় ১৪০০ টাকা করে। সে হিসেবে কেবল সার বিক্রি করতে না পারায় প্রতিদিন লোকসান হচ্ছে ২০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারী বেতন, আবাসিক ও পাওয়ার প্ল্যান্টে গ্যাস সংযোগ, মেনটেইনেন্সসহ সব ব্যয় মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা।

শাহজালাল সারকারখানা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মইনুল ইসলাম বলেন, গ্যাস সঙ্কটের কারণে বিসিআইসি থেকে উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস থেকে আমরা পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছি না। ফলে ২৩ এপ্রিল থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ঈদের পর গ্যাসের চাহিদা কমলে আবার চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই সারকারখানাটির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন প্রতিষ্ঠিত এ কারখানা বারবার উৎপাদন বন্ধ হওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পুরণ করা সম্ভব হবে না। ফলে লোকসান গুণতে হবে।

গতবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হওয়া সত্ত্বেও প্রায় ২১৮ কোটি টাকা লোকসান গুণে এই কারখানা।

অথচ জরার্জীন হয়ে পড়া প্রাকৃতিক গ্যাস সারকারখানা (এনজিএলএফ) দীর্ঘদিন ধরে লোকসান গোনায় পুরনো কারখানার পাশেই প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শাহজালাল সার কারখানা নির্মান করা হয়। গত অর্থবছর থেকেই প্রথম বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে শাহজালাল সার কারখানা লিমিটেড।

উৎপাদন শুরুর পর থেকেই যান্ত্রিক ত্রুটি-গ্যাস সঙ্কটসহ বিভিন্ন কারণে কয়েকদফা বন্ধ থাকে উৎপাদন। এমনটি চলতে থাকলে এ কারখানার ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন একাধিক কর্মকর্তা। কয়েকজন কর্মচারী শংকা প্রকাশ করে জানান, নতুন পে-স্কেল পাচ্ছিনা সাথে টার্গেট পুরণ না হওয়াতে তাদের প্রাপ্য ‘টার্গেট বোনাস’ ৫% ও পাচ্ছেন না তারা। সব মিলিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী শ্রমিক সব পরিবারেই হতাশা বিরাজ করছে।