বিয়ানীবাজারে গত ৯ বছরে কোরবানি দেয়া পশু চামড়ার দাম কমেছে প্রায় ১৫ গুণ। ২০১০ সাল থেকে বিয়ানীবাজারে কোরবানি দেয়া পশু চামড়ার দাম কমতে শুরু করে। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের সাথে স্থানীয় সিন্ডিকেটের যোগসাজশ করে কোরবানি পশুর চামড়ার দাম কমিয়েছে।

এ সব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বিক্রি হচ্ছে নামমাত্র মূল্যে। সচেতন মহলের অভিযোগ, কোরবানি দেয়া পশু চামড়া বিক্রি করা অর্থ বিতরণ করা হয় সমাজের গরিব মানুষের মধ্যে। গরিবের হোক থাকায় কোরবানিতে জবাই করার পশুর চামড়া বিক্রি করার টাকা কমে যাওয়া নিয়ে প্রভাবশালী কিংবা প্রশাসনের কোন মাথা ব্যথা নেই। অথচ বছরের অন্য সময় পশুর চামড়া বেশ ভাল দামে বিক্রি হয়।

ঈদের দিন বিকালে শহরতলীর মুরাদগঞ্জ মাদ্রাসার সামনে কোরবানি দেয়া পশু চামড়ার স্তুপ থেকে চামড়া বাছাই করছেন শ্রমিকরা। চামড়া থেকে মাংস কেটে নেয়াসহ চামড়ার প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তারা কাজ করছেন। এ কাজের সমন্বয় করছেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আতিকুর রহমান।

তিনি বলেন, এবার চামড়ার দর কত পাবো এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে গত বছর ৩শত থেকে সাড়ে ৩শত টাকায় চামড়া বিক্রি করেছি। এবার এ দর পাওয়া নিয়েও শংকায় আছি। এছাড়া চামড়া বিক্রি করতে হয় বাকিতে। তিনি বলেন, এবার ২শত টাকার উপরে বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।  ২০০৯ সালে সাড়ে ১৬শ’ টাকায় একেকটি চামড়া বিক্রি করেছি। ২০১০ সাল থেকে হঠাৎ করে চামড়ার দাম কমতে শুরু করে। এখন একেবারে তলানিতে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে ৪শত চামড়া সংগ্রহ করছেন বলে তিনি জানান।

উপজেলার প্রত্যেক এলাকার চিত্র একই রকম। কোরবানি দেয়া পশুর চামড়ার মূল্য একেবারেই কম। ১শত টাকা থেকে দেড়শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব চামড়া।

মাথিউরা আব্দুল হাই বলেন, ফড়িয়ারা ১শত টাকা বলায় চামড়া বিক্রি না করে শেখলাল মাদ্রাসায় চামড়া দিয়েছি। ৬০ হাজার টাকার গরুর চামড়ার দাম মাত্র ১শত টাকা। একই কথা বলেন পৌরসভার কলেজ রোডের ব্যবসায়ী মজির উদ্দিন। তিনি বলেন ৭০ হাজার টাকার গরুর চামড়ার দাম দিতে চায় ১২০ টাকা। এতো সস্তায় এর আগে চামড়া বিক্রি করেছি বলে আমার মনে নেই। চামড়া বিক্রি না করে এক গরিবকে দিয়ে দিয়েছি।

সবার দাবি কোরবানি পশুর চামড়া দাম শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা না নেয়ায় এ সিন্ডিকেট এখন অনেকটা বেপরোয়া।