২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের নয়টি ম্যাচের চারটি হয়েছিল সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। তখন গ্রুপ পর্বের কয়েকটি ম্যাচ ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামেও হয়েছিল। পরের বছর জাতির পিতার নামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের কিছু ম্যাচ যশোরে হয়েছিল। গত বছর হয়নি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। এক বছর পর আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলের আসর বাংলাদেশে। পঞ্চম বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ১-১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। এবার ঢাকার বাইরের ভেন্যু হিসেবে থাকছে সিলেট। উদ্বোধনসহ মাঠের লড়াইয়ের নয় ম্যাচের ছয়টিই হবে ৩৬০ আউলিয়ার দেশে। দুটি সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে।

আগেই জানা গেছে, গোল্ডকাপের পৃষ্ঠপোষকতা করবে কে-স্পোর্টস। গতকাল বাফুফে ভবনে কে-স্পোর্টসের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে ঘরোয়া ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাফুফের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি এবং কে-স্পোর্টসের হয়ে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ করিম।

ক্যালেন্ডারে থাকলেও গতবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ আয়োজন করতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এবার ঘরোয়া মৌসুম শুরুর আগেই টুর্নামেন্টটি আয়োজন করতে চায় বাফুফে। ইতিমধ্যে সময়ও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

ছয় জাতির এ টুর্নামেন্টের সব দল এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বাফুফের চাওয়া এএফসির অধীনে থাকা পাঁচটি জোন থেকে পাঁচ দল নিয়ে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা। ইতিমধ্যে ওয়েস্ট এশিয়ার থেকে ফিলিস্তিন, আসিয়ান অঞ্চল থেকে ফিলিপাইন এবং দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চল থেকে নেপাল অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা দিয়েছে। সাউথ এশিয়ার অঞ্চলের বাকি আরেক দেশ স্বাগতিক বাংলাদেশ। ইস্ট এশিয়া এবং সেন্ট্রাল এশিয়া থেকে দুই দলকে চাচ্ছেন আয়োজকরা।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাকি দু’দল চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন, ‘ঘরোয়া মৌসুমের সূচি ঠিক রেখে একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা অনেক কঠিন। আমরা আগে অনেক দেশে গিয়েই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলেছিলাম। কিন্তু এখন এগুলো নেই। ফিফা, এএফসি এবং বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ব্যস্ততার কারণে কোনো দেশই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারছে না। আমাদের জন্যও কাজটি কঠিন। জাতির পিতার নামে বলে এই টুর্নামেন্টের গুরুত্ব অনেক। বঙ্গবন্ধুর নামে এমন একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত।’ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে এর আগে বেশিরভাগ দেশই যুবদল পাঠিয়েছিল। এবার জাতীয় দলকেই চাচ্ছেন সালাউদ্দিন।

আগের দুই আসরে ব্রডকাস্ট স্বত্ব নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল বাফুফের। এবার ব্রডকাস্ট স্বত্বটা স্পন্সর প্রতিষ্ঠান কে-স্পোর্টস দেখবে। এই টুর্নামেন্টে এবার দুটি চ্যানেলে খেলা দেখানো হবে।

বাংলাদেশি চ্যানেলে বাংলা ধারাভাষ্য এবং বিদেশি চ্যানেলে ইংরেজি ধারাভাষ্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিম, ‘দুটো চ্যানেলে গোল্ডকাপের খেলা দেখানো হবে। এখনও কোনো চ্যানেলের সঙ্গে আমাদের কথা হয়নি। টুর্নামেন্টে যেসব দেশ অংশগ্রহণ করবে, সেসব দেশে যেন খেলা দেখা যায় এমন টেলিভিশনের সঙ্গে আমরা চুক্তি করব। বাংলাদেশেরও একটি চ্যানেলে দেখা যাবে খেলা। বাফুফেকে সব ধরনের সহায়তা আমরা দেব। এই বছর লাভের টার্গেট আমরা করছি না, আবারও ক্ষতির সম্মুখীনও হতে চাই না।’

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সব কিছুই কে-স্পোর্টসের দায়িত্ব। ট্রফি, প্রাইজমানি, দলগুলোর আসা-যাওয়া, থাকা-খাওয়া সব কিছুই বহন করবে তারা। এর বাইরে বাফুফেকে এক কোটি টাকা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।