একজন বাবা তার সন্তানের ভালোর জন্য জীবনের প্রায় সবকিছুই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করতে সবসময় প্রস্তুত থাকেন। অন্যদিকে একজন সন্তানের আদর, শাসন আর বিশ্বস্ততার জায়গা হলো তার বাবা। বাবার মাধ্যমেই সন্তানের জীবনের শুরু। তবে পিতার পুর্নজীবন লাভে অনন্য এক ত্যাগ করলেন সন্তান। এমনই দৃষ্টান্ত গড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাসরত বাঙালি সন্তান সৈয়দ নাহিদ ইলিয়াস।

তার পিতা সৈয়দ ইলিয়াস খসরু। যুক্তরাষ্ট্রের টাইম টিভি ও সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার পরিচালক। বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বর্তমান কার্যকরী পরিষদ এর সদস্য। বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সদস্য।

গেল বছর প্রথমবার করোনার ভয়াল থাবায় সেদেশে প্রথম বাঙালি হিসেবে আক্রান্ত হয়ে দুই মাস ভেন্টিলেশনে ছিলেন। আগে থেকেই কিডনি রোগে ভুগছিলেন সৈয়দ ইলিয়াস। করোনায় আক্রান্ত ভেন্টিলেশনে থাকায় কিডনির খুব ক্ষতি হয়। এরপর ধীরে ধীরে শারীরিক নানা জটিলতা কাটিয়ে উঠলেও কিডনি দুটি সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যায়। জীবন বাঁচাতে উপায় ছিল একটাই ‘কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট’।

সৈয়দ ইলিয়াস খসরুর মা, স্ত্রী, বড় ছেলেও কিডনি দিতে চেয়েছেন। কিন্তু বাবার প্রতি ভালোবাসায় নাছোড়বান্দা আদরের কনিষ্ট সন্তান সৈয়দ নাহিদ ইলিয়াস। মাত্র ২২ বছর বয়সী নাহিদ নিজের ভবিষ্যতের কথা না ভেবে বাবার জন্য নিজের একটি কিডনি দিলেন।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকালে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে প্রথমে ছেলের কিডনি অপারেশন করেন চিকিৎসকরা। এরপর চিকিৎসকরা দুপুর দুইটায় সফলভাবে সেটি প্রতিস্থাপন করেন সৈয়দ ইলিয়াসের শরীরে। বর্তমানে বাবা ও ছেলে দুজনেই সুস্থ রয়েছেন বলে স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে।

নিউইয়র্কে অবস্থানরত সৈয়দ ইলিয়াসের কয়েকজন সহকর্মী বলেন, নিজের কথা চিন্তা না করে ছেলে তার বাবাকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়ে যে দৃষ্টান্ত গড়েছেন তা সত্যিই বিরল।

দেশে সৈয়দ ইলিয়াস খসরুর বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা। তাদের দুজনের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।