“দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ছে না। তাই মামলায় দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছে। এতে ভুক্তভোগীরা অনেক সময় বিচার ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহ হারান। অথচ দেশে আইনের কোন ঘাটতি নেই। তাই বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা উচিৎ।”

শনিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজে আয়োজিত ‘নারীর প্রতি সহিংসতা’ রোধ বিষয়ক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটন।

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে চলা ১৫ দিনব্যাপী প্রতিরোধ পক্ষ দেশব্যাপী উদযাপনের অংশ হিসেবে ‘প্রজেক্ট উই’ এর আয়োজনে ‘নির্ভয়া’ নামক এ সেমিনারে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ার কয়েকটি কারণ ও সমাধানে পরামর্শমূলক লিখিত বক্তব্যে সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী লিটন বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী জেলা হবিগঞ্জের দিকে তাকালে দেখা যায় সেখানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল তিনটি থাকায় বিচার প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত সম্পন্ন হয়। অথচ সিলেটে একটি তারিখের জন্য বিচার প্রার্থীকে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। এতে বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি ভুক্তভোগীরা আগ্রহ হারান।

এসময় তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন, বিচারিক প্রক্রিয়ায় গতি বৃদ্ধি, নৈতিক শিক্ষা ইত্যাদির প্রতি তাগিদ দেন তিনি।

সেমিনারে যৌতুক নিরোধ আইন, পারিবারিক সহিংসতা আইন, শিশু আইন, ও যৌতুক নিরোধ আইনের বিভিন্ন বিষয় তিনি আলোচনা করেন।

সেমিনাওে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শামিমা আক্তার চৌধুরী বলেন, এখনো দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে নারীদেরকে বিবেচনা করা হয়। এ ভাবনা খুবই নেতিবাচক। তাই দেশের উন্নয়নে এমন ভাবনার পরিবর্তন করতে হবে।

সেমিনারে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, প্রতিটি অসামজস্যতার বিরুদ্ধে তোমাদেরকে না বলা শিখতে হবে, প্রতিরোধ করতে হবে।

এসময় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট সুমনা ইসলাম সহিংসতা কমাতে নারীদের অধিকার সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।

সেমিনারে এসময় বক্তব্য রাখেন- সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মোছা. রুকসানা বেগম মহিলা কলেজের অধ্যাপক মুসাব্বির চৌধুরী, অধ্যাপক নাজমিন ইসলাম চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক বিমান বিহারী রায়, নারী উদ্যোক্তা নুজহাত ইসলাম।