সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেছেন, আমরা যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি তা বাস্তবায়নে ফসল উৎপাদনের বিকল্প নেই। আমাদের সকল পতিত ভূমিকে ফসল উৎপাদনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শাহাদাতবরণ করার পর রাষ্ট্র স্থবির অবস্থায় ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দায়িত্ব নেয়ার পর আবার কৃষি বিপ্লব শুরু হয়। কৃষিকে আজকের এই পর্যায়ে আনতে প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের বিনামূল্যে সার এবং ধানের বীজসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ দেওয়া হচ্ছে। ৭০ ভাগ ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষি যন্ত্রপাতি ধান কাটার মেশিন মাড়াই করার মেশিন কৃষকদের দেয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ হলরুমে কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ আয়োজন করে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফসানা তাসলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, সারা বিশ্বে এখন জ্বালানি সংকট তৈরি হচ্ছে । ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল ও খাদ্য শস্য দেশে আসতে পারছে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। জ্বালানি সংকটের কারণে সারা বিশ্ব মনে করছে যে একটি দুর্যোগ হতে পারে। এবং সেটির আগাম প্রস্তুতি নেতে প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছেন এবং আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন যাতে আমাদের সমস্ত জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসি। ১ ইঞ্চি জায়গা যেন খালি না থাকে। জাতিসংঘ মনে করছে খাদ্য সংকট মোকাবেলায় একমাত্র মাধ্যম হলো নিজেদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা। তাহলে আর বিদেশ থেকে চাল, গম ও সয়াবিন তেল কিনতে হবে না। বিদেশ থেকে সয়াবিন তেল না কিনলে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হব। এখন থেকে নিজেরা যদি জমিগুলো চাষ না করি তাহলে টাকা থাকলেও পরবর্তীতে আমরা এগুলো কিনতে পারবো না সংকটের কারণে।

জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান আরও বলেন, সিলেটে এ বছর আমন ধানের টার্গেট ছিল ১ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর তার থেকে ৩০০০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষ করা হয়েছে। এবার আল্লাহর রহমতে আমনের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। আমন ধান কাটার পর বোরো ধান রোপনের আগে আমাদের জমিগুলো পতিত পড়ে থাকে এই স্বল্পকালীন সময়ে আমরা সরিষার বীজ উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর মাধ্যমে প্রত্যেক উপজেলায় বিতরণ করেছি। আগামীতে যে উন্নত বাংলাদেশের আমরা স্বপ্ন দেখছি সেটি বাস্তবায়নে আমাদের ফসল চাষের কোন বিকল্প নেই।

পরে তিনি কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন ফসলের বীজ বিতরণ করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শিপন আলীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান, বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র ফারুকুল হক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জামাল হোসেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তানিয়া আক্তার, বিয়ানীবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবাদ আহমদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাশেদ্দুন্নবী প্রমুখ।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার আহমেদ রাশেদুন নবী। কৃষক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গৌছ উদ্দিন।
এরআগে জেলা প্রশাসক ঢাকাউত্তর মোহাম্মদপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে মুক্তিযুদ্ধের পেক্ষাপট ও ইতিহাস বর্ণনা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। এরপর তিনি শেওলা ইউনিয়নের ভূমি অফিস ও শেওলা স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। বিকেলে জেলা প্রশাসক ঢেউনগর কমিউনিটি ক্লিনিক দর্শন শেষে দরিদ্র বিমোচন প্রকল্প, আশ্রয় প্রকল্প-২ এর আওয়তায় নির্মানাধীন গৃহ পরিদর্শন করেন।

জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বিয়ানীবাজারে দুপুরে ঢাকা উত্তর মোহাম্মদপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন ও শিক্ষার্থীদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস বর্ণনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরে শেওলা স্থল বন্দর দর্শন এবং শেওলা ভূমি অফিস ও কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেন। বিকালে ১টি উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প ও মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর অধীন ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘর পরিদর্শন করেন।

‌ লাউতার অবহেলিত এলাকায় এখন পাকা টেকসই রাস্তা, খুশি এলাকাবাসী