মহাসড়ক কিংবা আঞ্চলিক সড়ক, রাস্তার মোড়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অথবা বাসাবাড়ি- সবখানেই হিজড়াদের টাকা তোলা নতুন কিছু নয়। কেউ ভয়ে কেউ আবার স্বেচ্ছায় তাদের টাকা দিয়ে সহযোগিতা করে । কিন্তু ইদানিং হিজড়াদের আচরণ বদলে গেছে। আগের দিনের সেই টাকা তোলা এখন চাঁদা আদায়ে পরিণত হয়েছে। কেউ আবার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেই চলে অশ্রাব্য গালাগালসহ দুর্ব্যবহার এমন কি উলঙ্গ হয়ে পড়ে। হিজড়াদের এই বেপরোয়া চাঁদাবাজি যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেখা দিয়েছে তাদের বহুরূপী আচরণ।

তাদের সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজির কাছে বিশ্বনাথের জনগণ জিম্মি হয়ে পড়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বনাথে ৩-৪ জনের কয়েকটি দল বিশ্বনাথ রশিদপুর সড়কের বাইপাস মোড়, বিশ্বনাথ-রামপাশার, বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়ক, নকীখালী মোড়সহ উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে বরযাত্রীর গাড়িকে টার্গেট করে। বরযাত্রীর গাড়ি আটকিয়ে চাঁদার জন্য চিৎকার-চেঁচামেচি, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। এছাড়াও প্রাইভেট গাড়িসহ সবধরণের গাড়ি আটকিয়ে নিয়মিতভাবে চাঁদাবাজী করে তারা। বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও চাঁদা আদায় করছে তারা।

শুক্রবার দুপুরে রশিদপুরে নাজিরবাজার থেকে ছেড়ে আসা বরগাড়িকে আটকিয়ে হিজরা দল দাবি করে বসে দুই হাজার টাকা দিতে, কিন্তু বরপক্ষ রাজি না হওয়ায় বরপক্ষের গাড়ি আটকিয়ে রাখে এবং অশ্লীলভাষা কথাবার্তা শুরু করলে বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয় বরযাত্রীদের। তাছাড়া একই বরের গাড়ি বিশ্বনাথের বাগিচা বাজারের সামনে হিজরাদের আরো একটি দল হঠাৎ করে দৌড় দিয়ে গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় একই ভাবে এক হাজার টাকা দাবি করলে অপরাগ হয়ে পাঁচশত টাকা দিতে বাধ্য হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন- বরের গাড়ি সাথে করে মেহমান মুসাফির নিয়ে বিয়েতে যাচ্ছি কিন্তু বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি রাস্তায় হিজরাদের দল গাড়ি আটকিয়ে বলে ‘দামান লইয়া যাওগি, টেখা খই?’। এসময় তারা আমাদের কাছে দুই হাজার টাকা দাবি করে। শুধু তাই নয় এভাবে তিনটি স্থানে টাকা দিতে হয়। মান ইজ্জতের ভয়ে তাদের এরকম কার্যকলাপ মানতে হচ্ছে। হিজরাদের এমন দাপটে সবাই আতঙ্কে রয়েছে উপজেলার বাসী। মহাসড়কে দৌড় দিয়ে হঠাৎ করে গাড়ি সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে, এতে করে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। সাধারণ মানুষের দাবি এদের বিরোধে প্রশাসনের পদেক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, হিজরাদের এমন কার্যকলাপের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে করা হয়নি। হিজরাদের ব্যাপারে আমাদের কথা হয়েছে আমাদের ইউএন মহোদয়ের সাথে। হিজরাদের পুর্ণাবাসনের জন্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন আমাদের ইউএন মহোদয়।