জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় হুইপ সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মাননীয় চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদষ্টো আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন এমপি বলেন, ২০০৬ ও ২০০৮ সালে আমি সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন লাভ করি। মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নুরুল ইসলাম নাহিদকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করি, কথা ছিল এটিই তার শেষ নির্বাচন এবং পরবর্তি নির্বাচনে তিনি আমাকে সমর্থন করবেন। কিন্তু বাস্তবে তা প্রমাণিত হয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও আমি সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) ও সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) দু’টি আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয় লাভ করি। আমি সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই পরবর্তিতে নির্বাচনী সমীকরনের কারনে সিলেট-৬ আসন থেকে আমার মনোনয়ন প্রত্যাহারের মাধ্যমে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি আরোও বলেন, সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে সংসদ-সদস্য হিসেবে জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। উভয় উপজেলায় দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে আমার গ্রহনযোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছি। আরোও বলেন, দীর্ঘ দিন বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জে একজন সমাজকর্মী ও রাজণৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জের) মানুষ চায় আমি যেনো এ আসন থেকে নির্বাচন করি। অন্যদিকে বিগত প্রায় বছর (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে উন্নয়ন ও সমাজ কর্মের মাধ্যমে দলমত নির্বিশেষ সকলের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি বলে আমার বিশ্বাস। আগামী নির্বাচনে আমি সিলেট-৫ ও সিলেট-৬ এ দু’টি আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যে আসনে মনোনয়ন দেবেন সেই আসনে নির্বাচন করবো। এজন্য তিনি প্রবাসে বসবাসরত সকলের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।

তিনি আরোও বলেন, আমি দীর্ঘ দিন প্রবাসে ছিলাম প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সংসদে এবং সংসদের বাইরে কাজ করে যাচ্ছি। প্রবাসীদের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিশন গঠন এবং প্রবাসীরেদর ভোটাদিকারের জন্য বারবার সংসদে কথা বলেছি কথা বলেছি। আবারও সুযোগ পেলে প্রবাসীদের সমস্য সমাধানে সর্বাত্বক চেষ্ঠা করবো।

তিনি আরোও বলেন, ইতিমধ্যে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের রাস্তার নামকরন নিয়ে উপজেলাব্যাপী অসুন্তষ্টি দেখা দিয়েছি। দেশে-বিদেশে আন্দোলন শুরু হয়েছে। হুট করে চাইলেই রাস্তার নাম পরিবর্তন করা যায় না। রাস্তার নাম পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে সুশিল সমাজ, যুব সমাজ, ব্যবসয়ীবৃন্দ, এলাকাবাসী, ছাত্র সমাজসহ সকলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল। আমি জানিনা কি কারনে তাড়াহুড়া করে বিয়ানীবাজার কলেজ রোডের নাম প্রমথ নাথ রোডে নামকরন করা হলো। বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় কলেজের সামনের রাস্তার নাম কলেজ রোড হিসেবে পরিচিত। প্রমথ নাথের অনেক অবদান রয়েছে আমরা তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি, তাকে বিভিন্নভাবে সম্মানিত করা যেত। অনতিবিলম্বে এই রাস্তাটির নাম কলেজ রোড নামকরনের দাবী জানান।

তিনি আরোও বলেন, বিয়ানীবাজারে মৎসজীবি ব্যবসায়ীরা শতবৎসর থেকে ব্যবসা করছেন। সেখানে মার্কেট নির্মিত হয়েছে কিন্তু তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাদের দাবী গ্রাউন্ড ফ্লোরে ব্যবসা করতে চায়, সেইভাবে কথাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির কারনে তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছেনা। মৎসজীবী ব্যবসায়ীদের ন্যায্য দাবী বাস্তবায়নের জন্য সর্বাত্বক প্রচষ্টা থাকবে বলে দৃড় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

তিনি আরোও বলেন, বিয়ানীবাজার-মাথিউরা-তিলপাড়া-চন্দরপুর রাস্তায় বিয়ানীবাজার পৌরসভা কর্তৃক ময়লা-আবর্জনা স্থানান্তরের জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা খুবই যুক্তিক। এই দাবীর সাথে একমত পোষন করে তিনি বলেন অনতিবিলম্বে সেখান থেকে ময়লা-আবর্জনা স্থানান্তরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।

বিরোধীদলীয় হুইপ সেলিম উদ্দিন এমপি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং আয়োজনকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সোমবার রাতে লন্ডনের ব্লু-মুন সেন্টারে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিয়ানীবাজারবাসীর দেয়া এক নাগরিক সংবর্ধনার জবাবে হুইপ সেলিম এমপি এসব কথা বলেন।

শিল্পপতি যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শামছ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে এবং সাবেক ছাত্রনেতা আবুল হোসেন ওয়াদুদ ও মস্তাক আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরোও বক্তব্য রাখেন এলডিপি নেতা মনজ্জির আলী, আব্দুর রশিদ জাকির, ডা. ফয়হুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু, বিয়ানীবাজার জনকল্যান সমতিনি সাবেক সভাপতি আফাজ উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন চঞ্চল, বিয়ানীবাজার ক্যান্সার হাসপাতালের সিই্ও সাহাব উদ্দিন, হাজী শামসুল হক, আব্দুল কাদির, জকিগঞ্জ-কানাইঘাট ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের উপদেষ্টা আনিসুল হক, কানাইঘাট ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সাধারন সম্পাদক শামীম আহমদ, হাজী সাদ উদ্দিন, বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি নাজিদ উদ্দিন, মাথিউরা উন্নয়ন সংস্থার সাধারন সম্বপাদক সাদেক আহমদ, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক জিএস জেবুল আহমদ, কাউন্সিলর রুহুল আমিন, ফরহাদ হোসেস টিপু, নজরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য আতাইর রহমান আতা, আশুক আহমদ, যুক্তরাজ্য জাতীয় যুব সংহতির সাধারন সম্পাদক জবলু উদ্দিন, সরওয়ার হোসেন, ফয়েজ উদ্দিন লোদী, মাসুদ আহমদ, আহমেদ ফয়সাল প্রমুখ।