বিয়ানীবাজারে টাঙ্গাইলফেরত ভাড়াটিয়ার সংস্পর্শই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে কেয়ারটেকার আলম হোসেন (৪৫) জন্য। বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীলরা তার করোনা পজেটিভ শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই  উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের মেওয়া গ্রামে ছুটে যান। পরে তার করোনা পজেটিভ হওয়ার ঘটনায় বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। একই সাথে তার বসত বাড়ির পাশের দুটি বাড়িকেও লকডাউন করা হয়। পরে ওই ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানা গেছে, বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার নয়াগ্রামের মৃত ছয়ফুল ইসলামের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন আলম। সেই বাড়িতেই ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন আকবর হোসেন নামের টাঙ্গাইল জেলার এক যুবক। গত ১৮ এপ্রিল সে টাঙ্গাইল থেকে বিয়ানীবাজার ফিরে আসলে সন্দেহভাজন হিসেবে তার নমুনা সংগ্রহ করে সিলেট ল্যাবে প্রেরণ করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীলরা। পরে ২৪ এপ্রিল তার করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। সাথে সাথে ওই বাড়িসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িকে লকডাউন ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। আর আক্রান্ত ব্যক্তিকে সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এখন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পেশায় স্বর্ণের কারিগর ওই যুবকের সংস্পর্শে থাকা ওই বাড়ির কেয়ারটেকারের নমুনা সংগ্রহ করে গত ২৬ এপ্রিল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার কেয়ারটেকারের করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ আসায় বাড়িসহ আশপাশের আরও দুটি বাড়িকে লকডাউন করা হয়।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, আকবর হোসেন বিয়ানীবাজারে ফেরার পর তার সাথে বেশ ঘনিষ্টভাবে ছিলেন আলম হোসেন। আকবরের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে আলম প্রথমে তা পাত্তা দিতে চাননি। তিনি সর্বত্র বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন। পরে অবশ্য তাকে রাস্তাঘাটে তেমন একটা দেখা যায়নি। নিরীহ প্রকৃতির আলম হোসেন এমনিতেই একটু অসচেতন ছিলেন। মহামারী করোনা সম্পর্কে তিনি এবং তার পরিবার তেমন সচেতন নয়। এ কারণে করোনাক্রান্ত আকবরের সাথে বেশ ঘনিষ্টভাবে ছিলেন তিনি। পরে অবশ্য গ্রামবাসীর চাপে বাড়ির বাইরে আর তেমন বের হননি আলম। তবে নিজ ঘরে কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়টি মোটেও মানেননি তিনি। তার করোনা পজেটিভ আসার খবরে পরিবারের সদস্যরা ঝুঁকির মধ্যে আছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির এমন আক্রান্তের খবরে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু ইসহাক আজাদ বলেন, টাঙ্গাইলফেরত স্বর্ণের কারিগর ওই যুবকের সংস্পর্শে থাকায় কেয়ারটেকার করনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরে নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়াতে আক্রান্ত যুবকের বাড়ি লকডাউন ও রোগীকে সিলেট শহীদ সামসুদ্দীন আহমদ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

‘এবি টিভি’র সর্বশেষ প্রতিবেদন-