বিভিন্ন সময়ে ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী ৩০ বাংলাদেশিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এসব বাংলাদেশীকে হস্তান্তর করা হয়। করিমগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবজিত নাথ ও ইন্সপেক্টর আব্দুল ওয়াকিল আহমদ তাদেরকে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন অফিসার এসআই রফিকুল ইসলাম ও জকিগঞ্জ থানার এসআই মিজানুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করেন।

ফেরত পাঠানো ৩০ বাংলাদেশী হলো কক্সবাজারের নুরুল আলম (৩২), আরিফুল হাকিম (৩৮), বগুড়ার আবুল কালাম আজাদ (৩৩), ব্রাহ্মবাড়ীয়ার ওয়াহিদুল হক (৩৫), নাটোরের বাবুল সর্দার (৫২), ইউনুছ আলী (৩১), কুমিল্লার মোহাম্মদ জাবেদ (৪৮), মুমিন আলী (৩৭), কার্তিক চন্দ্র শীল (৪৮), আবুল খায়ের (৩০), ফরিদপুরের মোজাহার মোল্লা (৩৯), সাহেলা আক্তার (২৩), কুড়িগ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২৩), জাহাঙ্গির আলম (২৭), পাবনার ফজর আলী মোল্লা (৩৭), সাতক্ষিরার আজবাহার পিয়াদা (৬৫), চাঁদপুরের নুর মোহাম্মদ গাজী (৫৫), নেত্রকোনার সুচিত্রা বিশ্বাস (৪৩), আবুল কাশেম (৫০), ময়মনসিংহের আসমা বেগম (৩৭), সিলেটের আব্দুল কুদ্দুস (৪৫), খাগড়া ছড়ির নুরুল আমিন (৩০), জামালপুরের চাঁন্দ মিয়া ওরফে কাওছার আহমদ (৪৯), পঞ্চগড়ের ইলিয়াছ আহমদ (৩০), জাহাঙ্গির আলম (৩৩), দিনাজপুরের জাহাঙ্গির আলম সম্ভু (৩৭), সুনামগঞ্জে লক্ষন চক্রবর্তী (২৭), খুলনার আবুল কালাম মোল্লা (৪৯), চুয়াডাঙ্গার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (৪৬), চট্টগ্রামের আশীষ দাস (৫১)।

সাজা ভোগকারী নেত্রকোনার আবুল কাশেমের মা হাসিনা বেগম, বড় ভাই জয়নাল আবেদীন জানান ৬ বছর আগে আবুল কাশেম নিখোঁজ হয়। আমরা তাঁর আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। সরকারের তৎপরতায় তাকে ফেরত পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত।

ভারতের গোয়াল পাড়া কারাগারে সাজা ভোগকারী কুমিল্লার আবুল খায়ের বলেন, সখের বশে অবৈধভাবে ভারত ঘুরতে গিয়ে জীবনের দীর্ঘ সময় নষ্ট করেছি। আমি যে ভুল করেছি অন্য কেউ যেন এমন ভুল না করে।

জামালপুরের চাঁন্দ মিয়ার বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এসএম আব্দুল মান্নান ৭ বছর পরে ছোট ভাইকে কাছে পেয়ে যার পর নাই খুশি। অবৈধভাবে কেউ প্রবাসে গিয়ে নিখোঁজ হলে পরিবারে দুঃখের সীমা থাকে না।

হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষে ভারত ফেরত প্রত্যেককে তাদের স্বজনদের কাছে সমঝিয়ে দেয়া পুলিশ। স্বজনদের কাছে পেয়ে অনেকেই আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় জানান, ভারত থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশীরা ২ থেকে সর্বোচ্চ ২৩ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন কারাগারে সাজা ভোগ করেছেন। আটককৃতদের সঠিক নাম পরিচয় না থাকার কারণে অনেকে দীর্ঘদিন সাজা ভোগ করেছেন। পরবর্তীতে ভারতীয় হাই কমিশনের মাধ্যেমে নামপরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরে তাদেরকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়।