জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের ফলাফল ও গেজেট স্থগিত করে আগামী এক মাসের মধ্যে পুনরায় ভোট গণনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদের রিট আবেদনের শুনানি শেষে রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হাসান হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য মঙ্গলবার রাতে পাওয়া গেছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবি আব্দুল হালিম ক্বাফি। রিটের পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) ফারুক আহমদকে মাত্র ২ ভোটে পরাজিত দেখানো হয়।

পৌরসভার ৪টি ওয়ার্ডের ভোট গণনায় বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে মেয়র পদের ফলাফল স্থগিত করে পুনঃগণণার আদেশ চেয়েছিলেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ মেয়র পদের ফলাফল ও গেজেট স্থগিত করে ১ মাসের মধ্যে ৪টি ভোট সেন্টারের ভোট পুনরায় গণনার নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আহাদ (স্বতন্ত্র) পান ২০৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী ফারুক আহমে (স্বতন্ত্র) পান ২০৮১ ভোট।

তাৎক্ষণিক ফলাফল প্রত্যাখান করে ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ আনেন ফারুক আহমদ। এ নিয়ে তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কয়েকটি ভোট কেন্দ্রের ভোট পুনঃগণনার দাবী জানিয়েছিলেন।

কিন্তু লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করলেও আব্দুল আহাদকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিতও ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শাদমান সাকীব।

ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, নির্বাচনে মেয়র পদে পৌর আল ইসলাহর সভাপতি হিফজুর রহমান (স্বতন্ত্র) ১৯৮৫ ভোট পান। জাফরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র) ১১৫৬ ভোট, আওয়ামী লীগ মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পৌরসভার বর্তমান মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা খলিল উদ্দিন ৬৫৯ ভোট, বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী পৌর বিএনপির আহবায়ক সাবেক মেয়র ইকবাল আহমদ তাপাদার ৬০৭ ভোট, জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী পৌর জাপার সভাপতি সাবেক মেয়র আব্দুল মালেক ফারুক ৭৫৯ ভোট, বিএনপি বিদ্রোহী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন হীরা (স্বতন্ত্র) ১৮৫ ভোট পান।

এ ফলাফল স্থগিত চেয়ে পুনরায় ভোট গণনা করতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করে এ আদেশ পান।

ফারুক আহমদ জানিয়েছেন, মহামান্য হাইকোর্টের বেঞ্চ ফলাফল ও গেজেট স্থগিত করে আগামী ১মাসের মধ্যে পুনরায় ভোট গণনার নির্দেশ দিয়েছেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ অনুযায়ী গননা করলে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার জগ মার্কার ভোট অন্য মার্কার বান্ডিলে ঢুকানো হয়েছে। অন্য প্রার্থীর নষ্ট ভোটকে বাতিল না করে গননায় রাখা হয়েছে। এমন অভিযোগে বেশ কয়েকটি সেন্টারে তার এজেন্টরা স্বাক্ষর পর্যন্ত করেননি। এজেন্টরা বাতিল ভোট গণনা করতে বাঁধা দিয়েছিলেন কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে তা গননা করা হয়েছে। নির্বাচনে স্বচ্ছতা ছিলো না। সাংবাদিকরা ভোট গননা দেখার অনুমতি নির্বাচন কমিশন দিয়ে থাকলেও কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ভোট গননা দেখতেও দেয়া হয়নি। সাংবাদিকদের সরিয়ে ভোট গণনায় কারচুপি ও অনিয়ম করা হয়েছে।

বিদ্যার দেবীর আরাধনায় বিয়ানীবাজারে সরস্বতী পূজা উদযাপন