ভিজিএফ’র চাল চুরির মামলায় গ্রেফতার এড়াতে ৯দিন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার বুবলি। চেয়ারম্যান না থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম। ফলে বিপাকে পড়েছেন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষজন।

জরুরী প্রয়োজনে ইউনিয়নে গিয়ে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই। নাগরিক সনদপত্র, জন্মনিবন্ধন সনদে স্বাক্ষর করাতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ,  চেয়ারম্যানের স্বামী ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো: শাহাজাহান ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন গত ২৫ জুন রাতে কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের ২টি দোকান থেকে দু’দফা অভিযান চালিয়ে ১০ বস্তা ভিজিএফ চাল ও ১৩টি খালি বস্তা উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার সময় ৩জনকে আটক করলেও পুলিশ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। পরে এ নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক তোলপাড়। ঘটনার ৪দিন পর ২৯ জুন রাতে পুলিশ সদর ইউপি চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার বুবলিকে প্রধান আসামী করে ৪জনের নামে মামলা রেকর্ড করে। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার তালিকাভুক্ত আসামী ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার জমির আলী, ইউনিয়নের চৌকিদার ও দোকান মালিক মিলন মল্লিক এবং অপর দোকান মালিক সন্ন্যাসী নাইড়–কে আটক করে। এরপর থেকে গ্রেফতার আতংকে চেয়ারম্যান বুবলি পলাতক রয়েছেন।

সরেজমিন ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা হয় ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের রায়হান আহমদ, সালমান আহমদ ও আখলাছ মিয়া, ৫নং ওয়ার্ডের লুৎফা বেগম, কনর মিয়া, ৯নং ওয়ার্ডের সিতাব আলী, হোসেন মিয়া বসে আছেন। কেউ এসেছেন জন্ম নিবন্ধন সনদ নিতে আবার কেউ এসেছেন পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাগজ নিতে। কিন্তু ইউনিয়নে এসে সার্টিফিকেট ও জন্মসনদ পাচ্ছেন না চেয়ারম্যান না থাকায়। এখন কি করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। তারা অভিযোগ করেন, আগে চেয়ারম্যানকে না পেলেও উনার স্বামী সাবেক চেয়ারম্যান মো: শাহাজাহান ইউনিয়নের যাবতীয় কাজকর্ম চালাতেন। বর্তমানে চেয়ারম্যান পলাতক থাকায় তিনিও এখন ইউনিয়ন পরিষদে না আসায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে।

ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও ইউপি সদস্য ছালিক আহমদ জানান, চেয়ারম্যান একটি সমস্যার কারণে কয়েক দিন থেকে ইউনিয়নে আসছেন না। তবে তিনি আমাদের বলেছেন, আগামী দু’একদিনের মধ্যে ইউনিয়নে আসবেন। যদি না আসেন তাহলে আমরা সভা করে প্যানেল চেয়ারম্যানকে ভারপ্রাপ্ত  চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিবো।
কুলাউড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান নার্গিস আক্তার বুবলি’র সেলফোন (০১৭৬৩-৩০৩৩৭১) একাধিকবার  চেষ্টা করেও বন্ধ পাওয়া যায়।

কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউছুফ জানান, চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়েও তাকে আটক করতে পারেনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মো: গোলাম রাব্বি জানান, চেয়ারম্যান যদি ইউনিয়নে না আসেন তাহলে প্যানেল চেয়ারম্যানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেয়া হবে। কোনো মানুষ নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হবে না।