নিসর্গের সরাসরি কোনো প্রভাব আমাদের এখানে আসবে না। ভারতের অভ্যন্তরেই সেটা শান্ত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে  বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে নিসর্গ আমাদের বর্ষা মৌসুম আটকে দিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে দু’তিন দিন পর বর্ষা প্রবেশ করবে বলে জানান আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়-বৃষ্টি পূর্বাভাস রয়েছে। এছাড়া দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটাও থাকবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার নাগাদ ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছুকিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণও হবে।

নিসর্গের কারণে সরাসরি কোনো প্রভাব না থাকলেও গরম বেড়েছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ। তিনি বলেন, একটু ভ্যাপসা গরম রয়েছে। এটা নিসর্গের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে দুপুরে আবর সাগরে সৃষ্টি হওয়ার ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ ১২০ কিলোমিটার বেগে ভারতের মহারাষ্ট্রের উপকূলে আঘাত হেনেছে। এটি সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম করে সমতলে উঠে আসবে।

ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, নিসর্গ বুধবার (৩ জুন) দুপুরে সমতলে উঠে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড়টির মুখের উত্তর পূর্ব অংশ মহারাষ্ট্রের রায়গাদ জেলার আলিবাগে আঘাত হেনেছে। এটির ব্যাপ্তি রয়েছে উত্তরে গুজরাট এবং দক্ষিণে গোয়া পর্যন্ত। তবে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট উপকূল ও আশপাশের এলাকায় এটি বেশি ক্ষতি করবে। মুম্বাইসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা তছনছ করে দিতে পারে এই ঝড়।

নিসর্গের কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ১১০ কিলোমিটার, যা ১২০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমতলে পুরোপুরিভাবে উঠে এলে এটি তাণ্ডব চালিয়ে রাতের মধ্যেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। বৃহস্পতিবার এটি শান্ত হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মুম্বাই, পালগড়, রায়গাদ, থানে জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হবে। বাতাসে গতিবেগ থাকবে ১১০ কিমি পর্যন্ত। সমুদ্র প্রবল উত্তাল থাকায় ২ মিটার উঁচু জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতাও রয়েছে। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত মাছ ধরা বা জাহাজ, ফেরির চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লবণ ক্ষেত, শস্য, ঘরবাড়ি, গবাবি পশুসহ পরিবেশ-প্রতিবেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও করছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।

মে মাসের শেষে ঘূর্ণিঝড় আম্পান ভারতে পশ্চিমবঙ্গে (দক্ষিণ উপকূলে) ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সৃষ্টি করে দিয়ে যায়। যার বারো দিনের মাথায় দেশটির পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানলো নিসর্গ। আম্পান দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুপার সাইক্লোন ছিল। আর নিসর্গ আবর সাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়।

তথ্যসূত্র- বাংলানিউজ২৪।

‘এবি টিভি’র সর্বশেষ প্রতিবেদন-