সরকারি অর্থায়নে নির্মিত যাত্রীদের বিশ্রাম বা রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য হলেও সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্র, সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের চৌমুহনীর যাত্রীছাউনিটি এখন গাড়ির গ্যারেজ ও ময়লা-আবর্জনার ডাস্টবিন হিসেবেই ব্যবহূত হচ্ছে। যাত্রী সাধারণকে ছাউনিতে জায়গা না পেয়ে আশপাশের দোকানের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা এ থেকে পরিত্রাণের জন্য যাত্রীছাউনিটি সংস্কার করে জনস্বার্থে ব্যবহার উপযোগী করতে সংশ্নিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সংস্কারের অভাবে জেলা পরিষদ নির্মিত চৌমুহনী পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্রে যাত্রীছাউনিটি আর যাত্রীদের বসার মতো অবস্থায় নেই। দেয়ালের প্লাস্টার উঠে গেছে। খোলা জানালার গ্রিলে মরিচা ধরে গেছে। কেউ কেউ এটিকে মোটরসাইকেলের গ্যারেজ বানিয়ে রেখেছেন। আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলার নিরাপদ স্থান হিসেবেও এটি ব্যবহূত হচ্ছে। ফলে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে একদিকে আশপাশের পরিবেশ বিষিয়ে উঠছে, অন্যদিকে মশা-মাছি বংশবিস্তার করে রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে। যাত্রীছাউনির পাশের ক্যান্টিনটিও এক যুগ আগে বন্ধ হয়ে গেছে।

আশপাশের ব্যবসায়ীরা জানান, আগে দূরদূরান্তের যাত্রীরা এখানে বসে বিশ্রাম নিতেন, কেউ কেউ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতেন। বৃষ্টি-বাদলের দিনে দূরের যাত্রীরা এখানে নিরাপদে কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষা করতে পারতেন। এখন আর সে পরিস্থিতি নেই। যাত্রীছাউনির সামনের অংশটিও বর্তমানে অটোরিকশা চালকরা তাদের অস্থায়ী স্ট্যান্ড বানিয়ে দখল করে রেখেছেন। এছাড়া বারান্দায় রয়েছে বেশ কয়েকটি পানের দোকান। রাতের বেলা এখানে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য কেনা-বেচা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

রনকেলী ইয়াগুল গ্রামের অধিবাসী, সিলেট জজকোর্টের আইনজীবী জয়নাল আবেদীন বলেন, উপজেলা সদরের একমাত্র যাত্রীছাউনিটির অবস্থা দেখে মনে হয়, মানুষই মানুষের সমস্যা সৃষ্টি করে নানা রোগজীবাণুতে আক্রান্ত হচ্ছে। এখানকার ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে আশপাশের লোকজনের বসবাস করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

চৌমুহনীর সম্রাট ডিপার্টমেন্টালের জালাল আহমদ চৌধুরী বলেন, রাতের আঁধারে আশপাশের হোটেল, রেস্তোরাঁর বাসী পচা আবর্জনা এখানে ফেলে দেওয়ায় পরিবেশ আরও নোংরা হচ্ছে। তাছাড়া যাত্রীছাউনিটি পৌরসভার গেটের পাশে থাকলেও এ স্থানের ময়লা-আবর্জনা পরিস্কারে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ে না।

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী দেবোজিৎ সিনহা বলেন, ‘আগে এটি লিজ ছিল, এখন লিজ নেই। ছাউনিটির অবস্থা নাজুক এবং ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় আমরা এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি। শিগগিরই এ ব্যাপারে বসব এবং সিদ্ধান্ত নেব।’