সিলেটের গোলাপগঞ্জে ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম দত্তরাইল গ্রামে জ্ঞান সেনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন সন্দেহভাজন হিসেবে আটক সুহেল আহমদ। এ ঘটনায় করা মামলায় তাকে আসামি করার পর সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লায়লা মেহের বানু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, সুহেল (২২) স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়ে ডাকাতির ঘটনার পুরো বর্ণনা দিয়েছেন। জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে রাতে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পশ্চিম দত্তরাইল গ্রামে রোববার ভোরে ডাকাত দলকে ধাওয়া করতে গিয়ে পাঁচ গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় ডাকাত সন্দেহে গ্রামবাসীর পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান আরিফ আহমদ (২৭)। প্রথম দিকে নিহত আরিফের পরিচয় পাওয়া যায়নি। রোববার রাতে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের নগর ডেংরী গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। ডেংরী আরিফের গ্রামের বাড়ি। পুলিশ গ্রাম থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে সুহেলকে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুহেল ডাকাত দলের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে তাকে মামলার আসামি করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পাইপগান, ক্যামেরা ও কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়। এরপর সুহেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে সুহেল বলেন, জ্ঞান সেনের বাড়িটি আগের দিন দেখে এসে ভোররাতে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করা হয়। ওই বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকার বিষয়টি দিনের বেলা দেখা হয়। তা জেনে তাঁরা প্রথমে ভিডিও ক্যামেরা অপসারণ করেন।

এরপর নগদ ২ লাখ টাকা, ৪ ভরি ১২ আনা সোনাসহ আসবাব নিয়ে ঘটনাস্থলে ভাগ-বাঁটোয়ারা করেন। এরপর পালানোর আগে গ্রামের পাশে একটি টিলার কাছে অস্ত্র রাখতে গেলে গ্রামের লোকজন ঘটনা টের পেয়ে যান। গ্রামবাসীর ধাওয়া থেকে রক্ষা পেতে সংঘবদ্ধ হয়ে তাঁরা গুলি ছোড়েন। একজন ধরা পড়ায় শেষে আত্মরক্ষার্থে যে যাঁর মতো করে পালিয়ে যান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. লুৎফর রহমান জানান, সুহেলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পলাতক ডাকাতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রোববার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে গোলাপগঞ্জের পশ্চিম দত্তরাইল গ্রামের মিশ্রপাড়া জ্ঞান সেনের বাড়িতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি হয়। এ সময় বাধা দিলে ডাকাতেরা জ্ঞান সেনের ছেলে দুলাল সেনকে মারধর করেন। ডাকাতির ঘটনা জানতে পেরে পশ্চিম দত্তরাইল জামে মসজিদ থেকে কয়েকজন মাইকে ঘোষণা দেন। খবর পেয়ে গ্রামবাসী তাৎক্ষণিকভাবে ডাকাতদের ধাওয়া করেন। এ সময় ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে পাঁচ গ্রামবাসী আহত হন।

থাকছে না পিইসি-জেএসসি পরীক্ষা, ২০২৩ সাল থেকে নতুন শিক্ষাক্রম