সিলেটের জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় ভোট উৎসব শনিবার। জমজমাট প্রচার-গণসংযোগ, ভোটারের দ্বারে দ্বারে প্রার্থীদের বিরামহীন ছোটাছুটি শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ১২টায়। সিলেটের জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে শনিবার উৎসবে মাতবেন ভোটার ও প্রার্থীরা।

তবে শেষ পর্যন্ত সহিসংতা ছাড়া ভোট উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার শঙ্কা থাকায় ভোট উৎসবকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলতার পাশাপাশি অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

জানা গেছে, ভোটকে কেন্দ্র করে গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জে থাকবে কড়া নিরাপত্তা। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে নির্বাচনী এলাকায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ চেকপোস্ট। দুটি পৌরসভায় ১৮টি ভোট কেন্দ্রগুলোতে থাকছে বাড়তি নিরাপত্তা।

পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিলেট জেলা নির্বাচন অফিস ইতোমধ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। শুক্রবার বিকেল থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ভোটের সরঞ্জাম পৌঁছাবে ভোট কেন্দ্রে। এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জে থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে যানবাহন চলাচলে বিধি নিষেধের আওতায় আসছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভায় ৯টি ভোট কেন্দ্র ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় রয়েছে আরও ৯টি ভোট কেন্দ্র। এই দুটি পৌরসভার ১৮টি ভোট কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এবারের নির্বাচনে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২২ হাজার ৯শ ১৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৬শ ৯৪ জন এবং মহিলা ভোটার ১১হাজার ৩শ ১৯ জন।

অপরদিকে জকিগঞ্জে এবার মোট ভোটার ১২ হাজার ৩৪৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬হাজার ৩ জন এবং মহিলা ৬ হাজার ৩৪২ জন। ভোট কেন্দ্র বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা ঠেকাতে দুটি পৌরসভায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৯জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। মাঠ পর্যায়ের ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় ২জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

এছাড়া এই দুটি পৌরসভায় ২ প্লাটুন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। সেই সাথে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ১০জন করে পুলিশ সদস্য নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশের সাথে ভোটকেন্দ্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করবেন আনসার সদস্যরা। সেই সাথে ভোট কেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন শতাধিক গোয়েন্দা পুলিশ ও মোবাইল টিম।

ভোটকেন্দ্রে পোশাক পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি অপরাধ ঠেকাতে সাদা পোশাকের পুলিশও থাকছে। পালন করবে। পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি নিরাপত্তায় থাকছে র‌্যাবের ৮টি টিম। সেই সাথে র‌্যাবের টহল টিমের পাশাপাশি থাকছে বিশেষ চেকপোস্ট ও অভিযান।

নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, নির্বাচনে জেলা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত এজেন্ট এবং দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য নির্বাচনী এ নির্দেশনা শিথিলযোগ্য। এছাড়া সাংবাদিক, নির্বাচন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহৃত যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) লুৎফর রহমান জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে নজর রেখে ঢেলে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাঠ পর্যায়ে থাকা পুলিশের কাজ তদারকি করবেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ভোট কেন্দ্রে যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সেজন্য পোশাক পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও কাজ করবে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ের খবর জানাবে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে বিজিবি ও র‌্যাব। নির্বাচনী এলাকায় স্বমন্বয় করে কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কেউ কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটাতে পারে সেজন্য মাঠ পর্যায়ের ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি থাকছেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ভোট উৎসব যাবে শান্তিপূর্ণভাবে হয় সেজন্য সর্তক রয়েছে পুলিশ।

সিলেট র‌্যাব-৯ এর এএসপি (গণমাধ্যম) ওবাইন জানান, সিলেটের জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে র‌্যাবের নিয়মিত নিরাপত্তার পাশাপাশি থাকবে ৮টি টিম। সেই সাথে প্রধান সড়ক থেকে পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণসড়কসহ অন্যান্য সড়কে থাকবে র‌্যাবের চেকপোস্ট। সেই সাথে কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তা দেবে র‌্যাবের সদস্যরা।

ভারতে জেল খেটে বিয়ানীবাজার হয়ে দেশে ফিরলেন ১৯ বাংলাদেশি