১৯২২ সালের ২৩ মার্চ কানাইঘাট ইসলামিয়া মাদরাসা মাঠে তখনকার স্থানীয় বৃটিশ প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশের গুলিতে নিহত ৬ শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার বিকেল ২টায় কানাইঘাট দারুল উলুম মাদ্রাসা মিলনায়তনে কানাইঘাট ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের আয়োজনে ১৯২২ সালের ২৩ মার্চ সংগঠিত হৃদয় বিদারক ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন বক্তব্য দেন কানাইঘাট মাদ্রাসার শিক্ষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

মাদ্রাসার মুহতামিম মুহাম্মদ বিন ইদ্রিস লক্ষীপুরীর সভাপতিত্বে ও ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক মাওলানা মুহতাসিম বিল্লাহ’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম আল্লামা আলিম উদ্দিন দুর্লভপুরী, মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ছামসুদ্দিন দুর্লভপুরী, শিক্ষক আব্দুল হক গোবিন্দপুরী, কারী হারুন রশীদ চতুলী, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, কানাইঘাট ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য সচিব সাংবাদিক মাহবুবুর রশিদ, সাংবাদিক মুমিন রশীদ, মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা আসাদ উদ্দিন, জুনায়েদ শামসী সহ মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকবৃন্দ।

এসময় মাদ্রাসার শিক্ষকবৃন্দ বলেন, আজকের দিনটি হচ্ছে একটা বেদনাবিধুর শোকবাহ দিন। এই দিনে ১৯২২ সালের ২৩ মার্চ বর্তমান কানাইঘাট দারুল উলুম মাদ্রাসা তখন কানাইঘাট ইসলামিয়া মাদ্রাসা নামে পরিচিত ছিলো। এইদিন মাদ্রাসার বাৎসরিক ইসলামি জলসা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে তৎকালীন বৃটিশ স্থানীয় প্রশাসন মাদ্রাসা মাঠে ১৪৪ দ্বারা জারি করলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আলেম ওলামা সহ ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতা। বিটিশ প্রশাসনের বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে জলসা চলাকালীন সময়ে সকাল ১১টার দিকে প্রশাসনের নির্দেশে বৃটিশ পুলিশ জলসায় উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মানুষের উপর নির্ভিচারে গুলি বর্ষণ করলে শহীদ হন উপজেলার বায়মপুর গ্রামের মৌলভি আব্দুস সালাম,দুর্লভপুর গ্রামের
মুসা মিয়া,উজানিপাড়া গ্রামের আজিজুর রহমান,সরদারি পাড়া গ্রামের জহুর আলী,নিজ বাউরবাগ গ্রামের আব্দুল মাজিদ ও ছোটদেশ চটিগ্রামের মুহাম্মদ ইয়াসিন মিয়া এবং আহত হন অর্ধশতাধিক ধর্মপ্রাণ মানুষ। তারা আরো বলেন, বৃটিশ প্রশাসনের গুলিতে ৬ জন শাহাদাৎ বরণ করার পরও অসংখ্য আলেম উলামাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নির্যাতন ও নিপিড়ন চালানো হয়েছে। তাই আজকের এই দিনকে আমাদের সবাইকে স্মরণ রাখতে হলে যাতে করে আগামী প্রজন্মরা দিনটির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেন সেইসাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে কানাইঘাটের লড়াই নামে এ দিনকে স্বীকৃতি ও শহীদদের যতাযথ সম্মান প্রদর্শনের জন্য স্থানীয় প্রশাসকে এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়।

আলোচনা সভা শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন কানাইঘাট মাদ্রাসার মুহতামিম মুহাম্মদ বিন ইদ্রিস লক্ষীপুরী।