সিলেটের কানাইঘাটে অসময়ে তরমুজ চাষ করে বাজিমাত করেছেন আশিকুর রহমান নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি ইউটিউব দেখে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তিনি। আশিকের বাড়ি উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের বাউরবাগ পশ্চিম গ্রামে। তিনি গাছবাড়ী জামিউল উলুম কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।

আশিকুর রহমান জানান,গত বছর পরীক্ষামূলক অল্প জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করেন তিনি । লাভজনক হওয়ায় এ বছর দ্বিগুণ জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন তিনি। তরমুজ চাষে তাঁর এ সফলতার খবর এখন এলাকার মানুষের মুখে মুখে। একই মাঠে তিনি চাষ করেছেন ‘ব্ল্যাক সুইট ’ ‘গোল্ডেন ক্রাউন’ ‘ইওলো গোল্ড’ ও ‘পাকিজা’ জাতের তরমুজ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের খুঁটি ওপরে চিকন দড়ি দিয়ে জালের মতো তৈরি করা হয়েছে মাচা। মাচায় ঝুলছে চার রঙের তরমুজ। সাদা জালি ব্যাগ দিয়ে রশিতে বেঁধে রাখা রয়েছে প্রতিটি তরমুজ। কিছু তরমুজ পরিপক্ক হওয়ায় বিক্রির উদ্দেশ্যে আলাদা করে কেটে রাখছেন বাগানের মালিক আশিক।

আশিকুর রহমান বলেন, ‘মালচিং পেপারের দাম অনেক বেশি । তরমুজের বীজসহ সবমিলিয়ে তার খরচ পড়েছে ৩৫ হাজার টাকা। ১৬ শতক জমি বর্গা নিয়ে তরমুজ চাষ করছেি’। ব্যাপক আকারে তরমুজের চাষাবাদ করতে তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা চান। নিজস্ব জমি থাকলে আরও বেশি জায়গা নিয়ে তরমুজ চাষ করতে পারতেন বলেও জানান আশিক।’

মালচিং পদ্ধতিতে আশিকের তরমুজ বাগান দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছুটে আসছেন লোকজন। কারণ,এ অঞ্চলে নতুন এ পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ আশিকুর রহমানই প্রথম শুরু করেন। তরমুজ চাষ ছাড়াও মালচিং পদ্ধতিতে এবছর শষাও চাষ করছেন এই তরুণ। নিজের পাশাপাশি এই কাজে অন্যদেরও আগ্রহী করার চেষ্টায় এই তরুণ উদ্যেক্তা। নতুন পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে সফল হওয়ায় আশিকের পরিবারের লোকজনও খুশি।

আশিকের বাবা ইলিয়াস আলী বলেন,‘আমরা সবসময় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করি। আমার ছেলে পড়াশোনার পাশাপাশি সবজি চাষে আমাকে সহযোগিতা করে। সে নতুন পদ্ধতিতে তরমুজ ও শষা চাষ করছে, এতে আমরা পরিবারের সবাই খুশি।’

মালচিং পদ্ধতির সুবিধা সম্পর্কে আশিক বলেন, ‘এ পদ্ধতিতে প্রথমে মালচিং পলিথিন দিয়ে বীজতলা নির্মাণ করা হয়। এরপর মালচিং পেপারে মুড়িয়ে বীজ জমিতে রোপণ করা হয়। এবার বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার পর মালচিং পেপার ছিদ্র করে দেওয়া হয়। যেহেতু বীজগুলো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো থাকে, তাই কোনো কীটপতঙ্গ আক্রমণ করতে পারে না। ফলে কীটনাশক ব্যবহারেরও প্রয়োজন হয় না। মালচিং পেপারে বীজতলায় সূর্যের তাপ কম লাগে,ফলে বীজতলার জায়গা ঠান্ডা থাকে। সাধারণ এ পদ্ধতিতে গাছ তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে,ফলনও ভালো হয়।’

সম্প্রতি আশিকের তরমুজ বাগান পরিদর্শনে যান কানাইঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.এমদাদুল হক। তিনি বলেন,’ মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে ওই শিক্ষার্থীর খোঁজখবর আমরা শুরু থেকেই নিচ্ছি । কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহায়তাও দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।’

‌বিয়ানীবাজারের রাজবাড়ি ডেইরি ফার্ম- গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে লোকসানে খামারি কালাম