সিলেটে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলছে। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। এতে চিকিৎসাসেবা নিয়ে এক ধরণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে আলাদা করোনা ইউনিট চালু করেছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। করোনা পরীক্ষার জন্য আলাদা পিসিআর ল্যাব স্থাপন প্রক্রিয়া চলছে। এমনকি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ২০ হাজার অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজও চলমান।

সিলেটের শহিদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের ১০৫ শয্যার পাশাপাশি ৩১ শয্যাবিশিষ্ট শাহপরান হাসপাতালেও করোনার চিকিৎসাসেবা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি দুটি ওয়ার্ডে একশতাধিক শয্যা নির্ধারণ করে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গের রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে ওসমানী হাসপাতাল। শুধু তাই নয়, ওসমানী হাসপাতালে দুটি ওয়ার্ডের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটা ওয়ার্ডে সীমিত হারে মোট ১৮৫ টি করোনা বেড প্রস্তুত রেখেছে সিলেটের সর্ববৃহৎ এ হাসপাতালটি। একই সাথে করোনা পরীক্ষার নমুনা জট কাটিয়ে উঠতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবের পাশাপাশি হাসপাতাল অভ্যন্তরে নতুন করে আরও একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। বর্তমানে হাসপাতালে ১০ হাজার অক্সিজেন প্ল্যান্ট থাকলেও করোনা রোগীদের চিকিৎসায় আরও ২০ হাজার অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে শেষ পর্যায়। সব মিলিয়ে ৩০ হাজার অক্সিজেন প্ল্যান্ট নিয়ে হবে করোনার চিকিৎসা।

হাসপাতালের নিচ তলার ২৬ ও ২৭ নম্বর এ দুইটি ওয়ার্ডকে সম্পূর্ণ করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সাথে সার্জারি বিভাগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আলাদা ভাবে ২০টি বেড, গাইনী বিভাগের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১১টি বেড, শিশু বিভাগের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ২০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।

তিনি বলেন, সময়ে সময়ে করোনার বিস্তার বাড়ছে। করোনা রোগীদের মধ্যে অনেকেই অনেক জটিল রোগে ভোগেন। এ ক্ষেত্রে তাদেরকে করোনার পাশাপাশি নিয়মিত রোগের চিকিৎসা দিতে হয়। এসব বিষয় বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট বিভাগে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গের রোগীদের আলাদা ব্লক করে আলাদা বেড করা হয়েছে।

ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, সোমবার ১৩ জুলাই শহিদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল থেকে একজন করোনা রোগীকে ওসমানী হাসপাতালে এনে সিজার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি গাইনি ওয়ার্ডের করোনা ব্লকেই আছেন। একই ভাবে এমন অনেক রোগীই আসবে যাদের ইমার্জেন্সি ভাবে অন্য রোগের চিকিৎসা দিতে হবে। এজন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি আছে।

করোনা চিকিৎসায় অক্সিজেন বাড়ানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওসমানী হাসপাতালে বর্তমানে ১০ হাজার অক্সিজেন প্ল্যান্ট আছে। কিন্তু করোনা রোগীদের জন্য আরো অনেক বেশি অক্সিজেন প্রয়োজন হতে পারে। তাই অক্সিজেন প্ল্যান্ট বাড়ানো হচ্ছে। নতুন করে আরো ২০ হাজার অক্সিজেন প্ল্যান্ট বাড়ানোর কাজ শেষ পর্যায়। আগামী ১৫ দিনের ভিতর এ কাজ শেষ হবে আশা করছি।

এদিকে সিলেটে নমুনা জট কাটিয়ে উঠতে ওসমানী হাসপাতাল অভ্যন্তরে নতুন করে একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। কিছু মেশিন ইতোমধ্যে এসেছে। বাকি মেশিনগুলোও পর্যায়ক্রমে আসবে বলে জানান এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।

তথ্যসূত্র- সিলেট ভয়েস।

করোনা- বিয়ানীবাজারে আরও ৩জন আক্রান্ত