সিলেটের এমসি কলেজের হোস্টেলে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। একই সাথে ধর্ষণে অন্য তিনজন জড়িত বলেও আদালতে দাবি করেছেন তিনি। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান ও আরেক আসামি অর্জুন লস্করকে সিলেট মহানগর হাকিম ২য় আদালতে হাজির করা হয়।

আদালতের হাকিম সাইফুর রহমান গণধর্ষণ মামলার দুই আসামির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী অংশ নেননি।

শুনানিতে অংশ নেওয়া একাধিক আইনজীবী জানান, আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী তা থাকায় আদালত আসামিদের কাছে তাদের কোনো বক্তব্য আছে কী না জানতে চান। এসময় সাইফুর রহমান নিজেকে নির্দোষ হিসেবে দাবি করেন।

সাইফুর আদালতকে বলেন, রাজন, আইন উদ্দিন ও তারেক এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি জড়িত ছিলাম না।

রিমান্ড শুনানিকালে এপিপি খোকন কুমার দত্তের সাথে রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করেন এডভোকেট মুজিবুর রহমান, এডভোকেট সাজ্জাদ আহমদ, এডভোকেট প্রবাল চৌধুরী পূজন, এডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন প্রমুখ।

এর আগে সোমবার দুপুর ১১ টা ৫১ মিনিটে তাদেরকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। এদিকে মামলার অপর আসামি রবিউল ইসলামকে বিকেলে আদালতে তোলার কথা রয়েছে। আলোচিত এ মামলায় এই তিনজনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এছাড়া আটক বাকি তিনজন মাহমুদুর রহমান রনি, অজ্ঞাত রাজন এবং রাজন ও আইনুলকে র‍্যাব হেফাজতে রাখা হয়েছে। তবে তাদেরকে কখন থানায় হস্তান্তর কিরা হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু জানায়নি র‍্যাব।

এর আগে রোববার সকালে সাইফুরকে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে পৃথক এক অভিযানে একই দিন সকালে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা থেকে অর্জুন লস্করকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত সাইফুর রহমান বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাই পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তাহমিদ মিয়ার ছেলে আর অর্জুন জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রাম গ্রামের কানু লস্করের ছেলে।

এছাড়া রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব আর নবীগঞ্জ থেকে রবিউল ইসলামকে আটক করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি হবিগঞ্জ সদর থানার বাগুনীপাড়ার শাহ মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আর রবিউল ইসলাম (২৫) সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানাধীন বড়নগদীপুর (জাগদল) গ্রামের বাসিন্দা।

অন্যদিকে রোববার দিবাগত রাত ১ টার দিকে গণধর্ষণের ঘটনায় রাজন নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৯। এ সময় রাজনকে সহযোগিতায় করায় আইনুল নামের আরেক ব্যক্তিকেও আটক করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত রাজন তরুণীকে গণধর্ষণ মামলার অজ্ঞাত আসামি ছিল বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে সিলেট এমসি কলেজের হোস্টেলে এক তরুণীকে গণধর্ষণ করেছে মহানগর ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। অভিযুক্ত এসব কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।

এদিকে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে এসএমপির শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতিত ওই তরুণীর স্বামী মাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

পরে রোববার দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম ৩য় আদালতের হাকিম শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার তরুণী। এসময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আর আদালত তরুণী জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

বিমান টিকেট পেতে ভোগান্তি কাজে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তায় হাজারো প্রবাসী