আজ মা দিবস। আমার মা আমার জান্নাত ও ভালোবাসার ব্যাংক। যে ব্যাংক হতে বিনা সুদে ভালোবাসা, পরামর্শ, শাসন, টাকা নিয়ে থাকি। বিনিময়ে ভালোবাসা প্রদান ও একাকীত্ব গোছানোর নিরন্তর চেষ্টা।

শিশু বয়স হতে আজ অব্দি মায়ের হাত ধরে ধীরে ধীরে বড় হচ্ছি। আজ ব্যক্তিজীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানো নিয়ে ব্যস্ত। ভাই তাঁরা জীবন-জীবিকার তাগিদে সুদূর প্রবাসে, মা থেকে হাজার মাইল দুরে। আজ ৭০ ছুই ছুই মা পুকুর পাড়ের কুটিরে বড় একা নিঃসঙ্গ। প্রায় অচল দেহের অবসরে তাঁর আপনজন বলতে জানালার ফাঁক দিয়ে দূর নীলিমার আকাশ, প্রকৃতি ও একাকীত্ব। তারপরও আমাদের সুখের জন্য মা হাসি মুখে ‘ভালো আছি’ বলে অভিনয় করে চলেছেন জগৎ-সংসারে।

আমি আজও ব্যক্তিজীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি মায়ের একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতা দূর করার নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।একাকীত্ব মানুষদের একটু সময় দিলে তাঁরা কতোটা আনন্দিত হয় তা আমার মতো যাদের নিঃসঙ্গ বাবা-মা আছে তারা ভালো অনুভব করতে পারবেন।

আমাদের প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকার কোটি টাকার দালানগুলো যেন একেকটি বৃদ্ধাশ্রম। সন্তানরা প্রবাসে থাকেন আর বৃদ্ধ মা-বাবা কাজের লোকেদের আশ্রয়ে লালিত পালিত হোন। মায়েদের কাছে টাকা, বিলাস বহুল প্রসাদ থাকা সত্ত্বেও তারা আজ নিঃসঙ্গ বিদ্ধাশ্রমে দিনাতিপাত করছেন।

যুবক থেকে বৃদ্ধ, আপনারা সকলে আপনাদের ব্যক্তিগত ভালোবাসার মানুষের পাশাপাশি পরিবারের মা-বাবাসহ বায়োবৃদ্ধ ব্যক্তিদের একটু সময় দিন। ব্যক্তি ভালোবাসার মানুষ আপনার কাছে ভালোবাসার বিনিময়ে কিছু না কিছু প্রতিদান চাইবেই কিন্তু আমার/আপনার মায়েরা আমাদের নিঃশর্তভাবে ভালোবেসে যান অনন্তকাল।

সকলে আমার জান্নাত ও ভালোবাসার ব্যাংক ‘আমার মা’ এর জন্য দোয়া করবেন। বটবৃক্ষের মতো মা যেন আমার পাশে দীর্ঘদিন থাকতে পারেন।

লেখক- সহ সভাপতি, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ বিয়ানীবাজার।