অবশেষে আইনজীবী পেলেন রায়হান হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত এসআই (বহিস্কৃত) আকবর হোসেন ভূঁইয়া। গত ১০ ডিসেম্বর আকবরের পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন অ্যাডভোকেট মো. মিসবাউর রহমান (আলম)।

যদিও এর আগে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির রায়হান হত্যার মুল অভিযুক্ত আকবরের পক্ষে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

মো. মিসবাউর রহমান (আলম) সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির ২ নং বারের সদস্য বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে আকবরের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী মিসবাউর রহমান (আলম) বলেন, আকবরের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা চাওয়া হলে আমি তার পক্ষে ওকালতনামা জমা দিয়েছি। আইনি সহায়তা পাওয়া প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার।

এর আগে গত ৯ নভেম্বর তারিখে কানাইঘাটের ভারতীয় সীমান্ত থেকে আকবরকে আটক করা হয়। পরে ১০ নভেম্বর সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেমের আদালতে তাকে হাজির করে পিবিআই সিলেটের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসাইন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তার ৭ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পরে ১৭ নভেম্বর ফের তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। কিন্তু এ দুই দিনই আকবরের পক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না।

এমনকি রায়হান হত্যার পর সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ রায়হানের মা ও তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে আকবরের পক্ষে কেউ আদালতে দাঁড়াবেন না বলে ঘোষণা দেন।

তবে আকবরের পক্ষে আইনজীবীর ওকালতনামা সম্পর্কে জানতে চাইলে সিলেট জেলা বারের সভাপতি এডভোকেট এটিএম ফয়জ উদ্দিন সিলেট ভয়েসকে বলেন, আইনি সহায়তা পাওয়া সকল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। যদিও আমরা ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলাম আকবরের পক্ষে কেউ আদালতে দাঁড়াব না। কিন্তু কেউ যদি আকবরের পক্ষে দাঁড়াতে চায় তাহলে বাঁধা দিতে পারি না। তবে আমরা কেউ এখনো দাঁড়াইনি। আর আপনি যে আইনজীবীর কথা বলছেন এ ঘটনাটি আমি এখনো জানি না। উনার সাথে আলোচনা করে জানতে হবে।

গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান নামের ওই যুবক। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদস্যরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান।

ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, নগরের কাস্টঘরে গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সিলেট মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন। মামলাটি পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে পিবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

একে একে চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এসএমপির মোট আট পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজন প্রত্যাহার হয়েছেন। এছাড়া এ পর্যন্ত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে চার পুলিশ সদস্যকে। একই সাথে রায়হানের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দাতা হিসেবে সন্দেহভাজন একজনকেও গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।