বই পড়ার নেশা সেই শৈশব থেকে শুরু হয়েছিল। এরপর থেকে বই দেখলেই পড়তে না পারলেও একটু হলেও উল্টে দেখি। বই-ই আমার প্রিয় বন্ধু। তবে শিশু কিশোরমূলক বইগুলোই বেশি পড়তাম- এখন ও পড়ি। ভালো লাগে বলেই হয়ত এসব বইগুলোর মায়া এখনও ছাড়তে পারিনি। এর সাথে সংস্কৃতি চর্চাটাকেও কিছুটা বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি এবং দেওয়ার চেষ্টা ও করি।

এখন আসি মোদ্দা কথায় আসি। আজ কালকার ছেলেমেয়েরা বই পড়াকে একটা অযথা ‘পেরা’ বলেই মনে করে। তবে আমি সব শিশু কিশোরদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছি না। আমি দেখেছি অনেকেই বই পড়ে- কিন্তু সে সংখ্যা খুবই নগন্য। আমাদের অভিভাবকরা ও ছেলেমেয়েদের হাতে অন্যান্য শিক্ষণীয় বইগুলো দিতে নারাজ- কারণ পাঠ্যবই থেকে তাদের মনোযোগ নাকি চলে যাবে। আসলেই কি তাই?

আমার তো এরকম কোন দিন হয়নি- কথা হচ্চে তারা চানই না তাদের ছেলেমেয়েরা সংস্কৃতি চর্চা করুক। বেশিরভাগই শিশু কিশোর স্মার্ট ফোন কিংবা ট্যাব নিয়ে ফেসবুকীয় প্রসারে ব্যস্ত। তখন কোন অভিভাবকই বিধি নিষেধ আরোপ করেননি। করলে সেটা হয়তো অল্পজনই করেন। ইন্টারনেট ব্যবহারে ভিনদেশীয় সংস্কৃতি কিংবা অপসংস্কৃতির ঝুঁকি বেশি। বর্তমান সময়ে শিশু-কিশোর কিংবা তরুণরা অপসংস্কৃতি নিয়ে বেশি ব্যস্ত। আধুনিক এ সময়ে অপসংস্কৃতির ঝুঁকিতে রয়েছে গোটা দেশ। সেটা রাজধানী ঢাকা বলেন কিংবা বিয়ানীবাজার। নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে বিপথগামী হচ্ছে তরুণরাই।ঝুঁকছে মাদকের গিয়ে, হয়ে পড়ে মাদকাসক্ত।

গতানুগতিক পাঠ্যবই গলাধঃকরণ করতে এক শিক্ষক থেকে আরেক শিক্ষকের ছুটতে। এক্ষেত্রে পরিবার থেকেও সহযোগিতা করা হয়। স্মার্ট ফোন হাতে তুলে দিলেও কখনো একই অভিভাবক রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুলে কোন বই তুলে দেন না- এর পেছনে অভিভাবকদের অজুহাত সন্তান বখে যাবে। লেখাপড়া থেকে মন হারাবে!

আমাদের এই কিশোরদের অচিরেই এই অপসংস্কৃতি থেকে বের করে এনে তাদেরকে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি মূখী করতে হবে। তা না হলে অচিরেই আমাদের প্রজন্ম বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়।

আমাদের অভিভাবকদের উচিৎ এখনই তাদের শিশু কিশোর সন্তানদের খেলাধুলায় উৎসাহ দেয়া। নিজস্ব সংস্কৃতি নিয়ে অবসর সময়ে কথা বলা। সুযোগ পেলে এসব সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। পাঠ্যবই ছাড়াও অন্যান্য শিশু-কিশোর মূলক বই গুলো পড়তে দেয়া। পরিবার থেকে এসব চর্চা শুরু না হলে আমরা নিজস্ব সত্ত্বা বজায় রাখতে পারবো না। সংস্কৃতি চর্চাই পারে মানবিক সম্পন্ন একং উন্নত জাতি গঠনের কারিগর।

লেখক- শিক্ষার্থী, বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ।