বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রবেশপথে কোন বৈদ্যুতিক বাতি না থাকায় অনেকটা ভূতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকার প্রবেশদ্বার দিয়ে হাসপাতালেরজরুরী বিভাগ ও ভর্তি থাকা রোগীদের কক্ষে প্রবেশ-বাহির হতে গিয়ে একে অপরের সাথে ধাক্কা লেগে প্রায়শই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে রোগী ও তাদের স্বজনরা এর ভুক্তভোগী হলেও দায়িত্বশীলরা এ বিষয়ে উদাসীন। এছাড়া অন্ধকার প্রবেশদ্বার দিয়ে চলাচলের সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

গত বুধবার রাতে হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের প্রবেশ পথের বারান্দায় একাধিক বৈদ্যুতিক বাতির পয়েন্ট থাকলেও এগুলোর একটিতেও বাল্ব লাগানো নেই। অন্ধকারে আবার অনেকেই মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে এই বারান্দা দিয়েই যাতায়াত করছেন। রাত তখন প্রায় ১২টা। কথা হয় লিটন আহমদ নামে এক রোগীর সাথে। তিনি জানান, হঠাৎ করে বুকের ব্যথা শুরু হওয়ায় স্বজনরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু বারান্দায় কোন আলো না থাকায় অনেকটা অনুমানের উপর হেঁটে জরুরী বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরছেন তিনি।

সুমন আহমদ নামে আরেক রোগীর স্বজন জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) আমার বোনের প্রশব ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এসময় চিকিৎকদের পরামর্শে বাইরের ফার্মেসী থেকে তাড়াহুড়ো করে ওষুধ আনতে গিয়ে অন্ধকারের মধ্যে আরেক মহিলা রোগীর সাথে ধাক্কা লাগে। এজন্য অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।

রাবেয়া নামে এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করেন, তিনদিন ধরে রোগী নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। মাঝে মাঝে রাতে প্রয়োজনে বের হলে ভয় লাগে। এরকম ভূতুড়ে পরিবেশে চলাচল করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগী। তানভীর এলাহী মজুমদার নামে স্থানীয় আরেকজন জানান, বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসার মান নিয়ে নানা কথা শুনা গেলেও সাধারণ নাগরিক হিসেবে এসবে তেমন কান দেই না। কিন্তু আলোবিহীন এই বারান্দার এমন চিত্র প্রমাণ করে দায়িত্বশীলরা কতটা উদাসীন। বিয়ানীবাজারবাসীর গৌরবের এই প্রতিষ্ঠানটির এরকম দূর্নাম মেনে নেওয়ার মত না।

এ বিষয়ে জানতে টানা দুইদিনে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোয়জ্জেম আলী খান চৌধুরীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কখনও সিলেট মিটিংয়ে, কখনও ব্যস্ত পরে ফোন করছেন, কখনও আবার ফোন কেটে দিয়ে বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।