পূর্ব সিলেটের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ৫২ বছর শেষ করে ৫৩ বছরে পদার্পন করেছে। কলেজটি বিয়ানীবাজার মহাবিদ্যালয় নামে ১৯৬৮ সালের ১৫ আগস্ট যাত্রা শুরু করে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, প্রাচ্যবিদ্যার পরম্পরা ও পূর্বসূরিদের বিদ্যাচর্চা এবং জ্ঞানসাধনার সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতার প্রতীক বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ। মানবতাবাদী জমিদার স্বর্গীয় প্রমথনাথ দাসের (পাঁচ একর) ভূমিদানসহ এতদঞ্চলের সমাজহিতৈষী একদল বিদ্যানুরাগী ব্যক্তির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার লাভের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বৃহত্তর সিলেট জেলায় থানা পর্যায়ে প্রথম কলেজ হিসাবে ১৯৬৮ সালে কলেজটি স্থাপন করা হয়।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, গতকাল ১৫ আগস্ট প্রতিষ্ঠার ৫২ বছর পূর্ণ করে ৫৩ বছরে পদার্পন করে এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ এ বিদ্যাপীঠটি। তবে কলেজ ১৯৬৮ সালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করলেও এর পাঠদান কর্মসূচি সূচনা হয় ঐ বছরের জুলাই মাসে। সূচনালগ্ন কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন মো. ইমদাদুর রহমান। এছাড়াও রমেন্দ্র কুমার দাস, মো. মাহবুবুর রশীদ রশীদ, সুলেখা চৌধুরী, সৈয়দ এ বি কুতুব উদ্দিন আহমদ এবং মো. নুরুল ইসলামের মতো জ্ঞানতাপস অধ্যাপকবৃন্দ।
১৯৮৮ সালের ৩০ জুন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ কলেজটির সরকারিকরণ করেন। পরবর্তীকালে ২০০৯ সাল থেকে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপির সার্বিক দিকনির্দেশনা এবং পৃষ্ঠপোষকতায় এ কলেজে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এবং হচ্ছে। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে ৭টি বিষয়ে অনার্স কোর্স প্রবর্তিত করা হয়। পরে ৫টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স প্রবর্তন করা হয়। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্সে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। আসন সংখ্যা বৃ্দ্ধি করার লক্ষ্যে বর্তমানে ১০তলা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে।
বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজকে এগিয়ে নিতে সম্প্রতি বিদায়ী অধ্যক্ষ প্রফেসর দ্বারকেশ চন্দ্র নাথ এবং উপাধ্যক্ষ মো. তারিকুল ইসলাম অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। কলেজকে একটি অভিষ্ট লক্ষ্যে উন্নতি করতে কাজ করেছেন এ দুই শিক্ষাবিদ। বর্তমানে উপাধ্যক্ষ মো. তারিকুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে গৌরবের ৫২ বছর পার করলেও কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিদ্যাপীটের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া অদৃশ্য করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজও বন্ধ থাকার ফলে এবার ইচ্ছা থাকার পরও সেই শুভক্ষণটি উদযাপন করা সম্ভব হয়নি বলে কলেজ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।