সারাদিন ভোগান্তির পর অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সিলেটে চলা পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে। সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন আহ্বানে পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক হয়। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে সিলেট সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
এমন তথ্য রাত দশটায় সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন- ‘আমরা ৫ দফা দাবিতে ধর্মঘট করেছিলাম। ১ দিন ধর্মঘট করার পর বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় আমাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। আমরা প্রশাসনের আশ্বাসে আপাতত আগামী মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত করেছি।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাকির হোসেন ও ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ’র নেতৃবৃন্দ।
জানা যায়- ৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার ভোর থেকে সিলেট জেলায় কর্মবিরতি পালন করেন পরিবহন শ্রমিকরা। ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ’র ডাকে এ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত লাঠি হাতে সিলেটের বিভিন্ন রাস্তায় ‘পিকেটিং’ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা কোনো ধরণের গণপরিবহন বা পণ্যবাহী গাড়িতে চলতে দিচ্ছেন না। এতে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীরা এবং চাকরিজীবীরা বেশ ভোগান্তিতে পড়েন। এরপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিবহন শ্রমিক নেতাদের নিয়ে সিলেট সার্কিট হাউসে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে পরিবহন ধর্মঘট আগামী অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত করা হয়।
পরিবহন শ্রমিকরা জানান- বেশ কিছুদিন ধরে ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালনসহ মিছিল-সভা করে আসছেন।
তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার ও উপ-কমিশনারের (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোর দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া। এছাড়াও অনুমোদনহীন গাড়ি যেমন- অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ডাম্পিংকৃত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
এ আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেছেন পরিবহন শ্রমিকদের ৬টি রেজিস্টার্ড সংগঠন। সংগঠনগুলো হচ্ছে- সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা ট্রাক পিকাপ কভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, ইমা লেগুনা হিউম্যান হুলার শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা অটো টেম্পু অটোরিকশা শ্রমিক জোট, সিলেট জেলা ট্যাংক-লরি শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন।