ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনেরর অভিরাম বৃষ্টিতে সিলেটসহ বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আবারো অবনতি হয়েছে। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বিয়ানীবাজার উপজেলাবাসী তৃতীয় দফা বন্যার আক্রান্ত হয়েছে। এর পূর্বে এতো স্বপ্ল সময়ে এ রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মূখে কবে পড়েছিল সিলেট অঞ্চল সেটি জানেন না বয়স্করা। সেটি কি শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয় না প্রকৃতির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করা এ বিপর্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজ্ঞজনরা।
গত ৩০ মে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রথম দফা বন্যায় কবলিত হয়েছিল। সুরমা ও কুশিয়ারার তীরবর্তী পাঁচ ইউনিয়নে ডাইক ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ৮ ইউনিয়ন প্লাবিত করে। এরপর ১৬ জুন থেকে দ্বিতীয় দফা বন্যায় পৌরসভাসহ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল প্লাবিত করে। দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি হাওর ও খাল-বিল থেকে নামার পূর্বে ১ জুলাই থেকে তৃতীয় দফা বন্যায় আক্রান্ত হলো সিলেট অঞ্চল। এর ফলে এখানকার মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। প্লাবিত থেকে ভেসে উঠা সড়ক আবার তলিয়ে গেছে, ফলে বেড়েছে দুর্ভোগ।
গত শুক্রবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া অভিরাম বৃষ্টি আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়ে আবহাওয়া অফিস। একই সময়ে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে ভারি বৃষ্টি পাত হবে বলে জানানো হয়েছে। এর প্রভাবে সিলেট অঞ্চলে তৃতীয় দফা বন্যার ভয়াবহ ঝুঁকি বাড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার. শেওলা পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৩ সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে সুরমার নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দুপুর ১২টায় সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
২০০৮ সালের পর ২০২২ সালে ভয়াবহ বন্যায় কবলিত হয়েছিল সিলেট অঞ্চল। এ দুই বন্যার মধ্যে ১৪ বছরের ব্যবধান থাকলেও প্রকৃতির বিরূপ আচরণ এবং পানি প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করায় এর খেসারত দিচ্ছে সিলেটবাসী। হাওরের উপর দিয়ে নির্মিত ইটনা-মিঠামইন-নিকলি সড়কটি যেন সিলেটবাসীর জন্য মরণ ফাঁদ- এ দাবি তুলছেন ভুক্তভোগীরা ।