সিলেটে আবারও কঠোর আন্দোলনের পথে হাটছেন পরিবহন শ্রমিকরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন বিভাগীয় শাখার প্যাডে ১৩টি দাবি-সংবলিত একটি স্মারকলিপি বৃহস্পতিবার (১৩ জুন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে দেওয়া হয়েছে।

এ স্মারকলিপিতে ২৫ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। এর মধ্যে দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হলে ২৬ জুন সকাল থেকে সিলেট বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন শ্রমিক কর্মবিরতি শুরু হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মইনুল ইসলাম।

স্মারকলিপিতে পরিবহন শ্রমিক নেতারা উল্লেখ করেন- সম্প্রতি সিলেট বিভাগজুড়ে বিভিন্ন চোরাচালান পণ্যবাহী গাড়ি জব্দ করছে প্রশাসন। এসব ঘটনায় মূল হোতারা থাকেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে, আর মামলায় আসামি করা হয় নিরীহ গাড়িচালক ও তার সহকারী বা পরিবহন শ্রমিকদের।

বিভাগের বিআরটিএ কার্যালয়গুলোতে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ও লাইসেন্স নবায়ন করাতে গিয়ে পরিবহন হন হয়রানির শিকার। এসব অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য চরমে। এছাড়া বিভাগের বিভিন্ন সেতুতে বছরের পর বছর ধরে টোলের টাকা আদায় করা হচ্ছে। এসব বিষয় থেকে পরিত্রাণ চান পরিবহন শ্রমিকরা।

স্মারকলিপিতে উল্লিখিত ১৩টি দাবি হচ্ছে-

১) হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামি গাড়িচালক সাহেদ আলীকে মামলা থেকে নিঃশর্তভাবে অব্যাহতি দিতে হবে।
২) ভারতীয় পণ্যের চোরাকারবারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩) বিভাগের বিভিন্ন সেতুর টোল আদায়ের সময়সীমা নির্ধারণ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ব্রিজের টোল আদায় বন্ধ করতে হবে।
৪) টোল আদায়ের নামে পৌরসভাগুলোতে চাদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
৫) এক জেলার গাড়ি অন্য জেলায় রিকুজিশন করা বন্ধ করতে হবে (বিশেষ করে মাইক্রোবাস) এবং রিকুজিশনকৃত গাড়ির জ্বালালি ও স্টাফদের খাবার যথাযথভাবে প্রদান করতে হবে।
৬) এক-দেড় ধরে নবায়নের জন্য জমাকৃত ড্রাইভিং লাইসেন্সগুলো দ্রুত ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৭) বিআরটিএ-এর কার্যালয়গুলোকে দালালমুক্ত এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন পরিসেবা প্রদানকারী কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।
৮) রেকারের নামে পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের চাদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
৯) উপজেলাভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন প্রদান করার আইন বাতিল করতে হবে ।
১০) যত্রতত্র ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা বন্ধ করতে হবে ।
১১) বিভাগের প্রত্যেক জেলার গ্যাস পাম্পগুলোতে হইতে ২৪ ঘন্টা নিরবিচ্ছিন্নভাবে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
১২) সড়ক ও জনপথের অব্যবহৃত খালি জায়গাগুলো অস্থায়ীভাবে গাড়ি স্ট্যান্ড হিসাবে ব্যবহার করার অনুমতি প্রদানসহ অবৈধ দখলদারমুক্ত করিতে হবে।
১৩)সিলেট মহানগরের হাসপাতাল-ক্লিনিক ও মার্কেটগুলোর পার্কিং ব্যবস্থা করার আগ পর্যন্ত রাস্তায় পার্কিং মামলা দেওয়া যাবে না।

২৫ জুনের মধ্যে দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হলে ২৬ সকাল থেকে বিভাগজুড়ে পরিবহন শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করবেন।