বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার প্রাচীন ও একমাত্র সরকারি সার্বজনীন শ্মশানটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। পৌরসভার দাসগ্রামে অবস্থিত শ্মশানটি সংস্কার অভাবে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে। শতভাগ বিদ্যুতায়িত বিয়ানীবাজার উপজেলার এই গুরুত্বপূর্ণ শ্মশানটিতে নেই কোন বৈদ্যুতিক কিংবা গ্যাসের চুল্লী। একটি পুকুর রয়েছে সেটিও পরিত্যাক্ত। ফলে চুল্লী ও পানি সংকট থাকায় ধর্মীয় কর্মকান্ডসহ শবদেহ দাহ করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের।

সরেজমিনে ঘুর দেখা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে শ্মশানটি অনেকটা পরিত্যক্ত এলাকায় পরিণত হয়েছে। সরকারি এ শ্মশানে নেই কোন বৈদ্যুতিক কিংবা গ্যাসে চুল্লি। এতে বিভিন্ন স্থান থেকে লাকড়ি যোগাড় করে শবদেহ দাহ করার কাজ চালিয়ে নেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্মশানে একটি পুকুর থাকলেও সেটা দীর্ঘদিন থেকে সংস্কারবিহীন রয়েছে। আরাধনার জন্যে জরাজীর্ণ টিনশেডের ঘর থাকলেও শ্মশানে নেই কোন শৌচাগার। তাছাড়া শশ্মানের পাশঘেঁষা ড্রেনেজ ব্যবস্থারও বেহাল দশা। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করায় ময়লা-আবর্জনায় ড্রেনটি পূর্ণ রয়েছে। এতে দূর্গন্ধে শ্মশানে দাড়িয়ে থাকা দায় হয়ে পড়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের।

এদিকে, দীর্ঘদিন দিন ধরে সংস্কার বঞ্চিত বিয়ানীবাজার সরকারি সার্বজনীন শ্মশানটিতে বৈদ্যুতিক কিংবা গ্যাসের চুল্লী স্থাপনসহ সার্বিক উন্নয়নে সহযোগিতা চেয়েছেন স্থানীয় সনাতন ধর্মের অনুসারীরা। তারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে অল্প দিনেই বিলুপ্তি ঘটবে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেদের শেষ সময়ের শবদে দাহ করার এই স্থানটি।

স্থানীয় বাসিন্দা মিহির চন্দ্র ও শ্রীকান্ত চক্রবর্তী বলেন, পৌর এলাকার স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শবদেহ দাহ করার একমাত্র স্থান এই শ্মশান। যথাযথ সংস্কার ও সংরক্ষণের অভাবে দির্ঘদিন ধরে শ্মশানটি বিলুপ্ত প্রায়। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি এখানে শবদেহ দাহ করার জন্য গ্যাসের চুল্লী তৈরি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তাই সংশ্লিষ্টদের প্রতি শ্মশানটির উন্নয়নের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপিসহ স্থানীয় বিত্তবান সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আর্থিক সহায়তায় বিগত দিনগুলোতে বেশ কয়েক এই শ্মশানের উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কাজ করানো হয়েছে জানিয়ে বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র মোঃ আব্দুস শুকুর বলেন, বর্তমানে শ্মশানের সংস্কারের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পক্ষ থেকে কোন দাবি কেউ করেননি। তবুও উদ্যোগ নিয়ে শ্মশানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করা এবং সেখানে একটি সৌরবিদ্যুতের সোলার স্থাপন করেছি। পৌর মেয়র আরও বলেন, পৌর এলাকার একমাত্র সার্বজনীন এই শ্মশানটি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে এখানকার সনাতন ধর্মের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করে শ্মশান সংস্কারে শীঘ্রই উদ্যোগ নেয়া হবে।

নানা সমস্যায় জর্জরিত বিয়ানীবাজার পৌরসভার সার্বজনীন শ্মশান