মৃদু ভূমিকম্পে বারবার কেঁপে উঠছে সিলেট। গেল ছয় মাসে সাতবার এ ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার (২৬ জুন) দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৪। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল চীনের হুতান শহরে।
এর আগে ২৫ মে ৫ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। যার উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৩৬৬ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অর্থাৎ সিলেটের পূর্বে। ১৪ এপ্রিলের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের ডাউকি ফল্টের পার্শ্ববর্তী জৈন্তাপুর এলাকায়। এছাড়া ২৭ জানুয়ারি ৪ দশমিক ১ ও পরদিন ৪ দশমিক ৯ মাত্রায় ভূকম্পন অনূভত হয়। এরপর ২১ জুন (রোববার) বিকাল ৪টা ৪৯ মিনিটে ৫ দশমিক ১ মাত্রায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর প্রায় ১২ ঘণ্টা ব্যবধানে সোমবার (২২ জুন) ভোর ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে দ্বিতীয় দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যার মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৮।
এ বিষয়ে সিলেটের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী জানান, এ অঞ্চলে সাধারণত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ও মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে ভূকম্পন হয়ে থাকে। তবে ১৯১৮ সালে উৎপত্তিস্থল হিসেবে সিলেট অঞ্চলে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল। রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল সিলেটের গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলার মধ্যবর্তী স্থান থেকে মৃদু ভূকম্পনের উৎপত্তি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডাউকি ফল্ট হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব কোণের সিলেট অঞ্চলে। কিন্তু এ ফল্টের অবস্থান সিলেটের গোয়াইনঘাট থেকে ২৪ কিলোমিটার ছাড়িয়ে ভারতের অভ্যন্তরে। তবে সিলেটের অভ্যন্তরে ৩ দশমিক ৫ বা ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ভয়াবহ অবস্থা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিলেট একদিকে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ‘ডাউকি ফল্ট’ থেকে মাত্র ২শ’ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অন্যদিকে ‘শাহবাজপুর ফল্ট’ও কাছাকাছি। যে কারণে সিলেটের জন্য ভূমিকম্পের ঝুঁকি খুব বেশি। ফলে এখানে ৬ থেকে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হবে আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি ঘন ঘন ভূমিকম্পের কারণে এ আশঙ্কা আরো বাড়ছে।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যখন যা হওয়ার তা হচ্ছে না। আর সিলেটের আশপাশে ভূমিকম্প উৎপত্তির ফল্ট থাকায় এ অঞ্চলটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
তথ্যসূত্র- সিলেট ভয়েস।