বড়লেখা প্রতিনিধি: ২২ মার্চ ২০১৭।
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একটি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও শরীরচর্চা শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলড্রেস পরে স্কুলে না যাওয়ায় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে শাস্তি স্বরূপ প্রকাশ্যে ২০ বার কান ধরে উঠবস করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার সকালে নিয়মিত সমাবেশ (পিটি) চলাকালে উপজেলার গাংকুল পঞ্চগ্রাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ শাস্তির ঘটনাটি ঘটে। প্রধান শিক্ষক জানালেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা সোমবার দুপুরে বিষয়টির মিটমাট করেছেন।
সরেজমিন শাস্তিপ্রাপ্ত ষষ্ঠ, নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্ররা অভিযোগ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ হায়দার ও শরীরচর্চা শিক্ষক বিশ্বনাথ নাহা স্কুলড্রেস পরে বিদ্যালয়ে না যাওয়ায় গত রোববার সকালে অন্তত ৫০ জন ছাত্রকে ২০ বার করে কান ধরে উঠবস করিয়েছেন। ছাত্ররা জানায়, বিদ্যালয় থেকে নির্ধারিত টেইলারিং শপ রতুলী বাজারস্থ এমএম টেইলার্সে স্কুলড্রেস তৈরির জন্য স্যারেরা তাদেরকে বলে দেন। সে অনুসারে সকলেই ওই দোকানে যাওয়ায় কাজের চাপ পড়ায় অনেকের স্কুলড্রেস তৈরিতে সময়ক্ষেপণ হচ্ছিলো। সমাবেশ (পিটি) চলাকালীন ছাত্রদের কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় অনেক ছাত্র চরম বিভ্রতবোধ করে এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়।
স্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র আনিফুল হক, আশরাফুল হক, এমদাদ আহমদ ও সদর উদ্দিন, ৯ম শ্রেণীর ছাত্র নাবিল হোসেন, ৮ম শ্রেণীর সাজু আহমদ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তাওহিদুল ইসলামসহ শিক্ষর্থীরা জানায়, আমরা কোনো অন্যায় করিনি তবুও প্রকাশ্যে আমাদের এরকম শাস্তি দেয়া হয়েছে। শাস্তিভোগকারী শিক্ষার্থী অভিভাবক জেবলু আহমদসহ অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, টেইলার সময়মত ড্রেস ডেলিভারী দিতে না পারায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এমনভাবে শাস্তি প্রদান অমানবিক।
প্রধান শিক্ষক আশরাফ হায়দার ৫০ জন ছাত্রকে উঠবস করানোর অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, কতেক ছাত্র দীর্ঘদিন ধরে স্কুল ড্রেস ব্যবহার করছে না। স্কুলের ডিসিপ্লিন রক্ষার্থে একছাত্রকে সামান্য শাস্তি দিয়েছেন। আইনে না থাকলেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এধরনের শাস্তি দেয়া হয়। তা সকলেই জানে। বিষয়টি স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা সোমবার শিক্ষার্থী অভিভাবকের সাথে বৈঠক করে সমাধান করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দে জানান, স্কুলড্রেস পরে না যাওয়ায় এধরনের শাস্তি দেয়া অনুচিত। বিশেষ করে স্কুলের হাজারো শিক্ষার্থীর সম্মুখে কান ধরে উঠবস করালে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়, লজ্জাবোধ করে যা পাঠ গ্রহনে প্রভাব পড়ে। শিক্ষার্থীকে যেকোন ধরনের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনেক আগেই নিষিদ্ধ করেছে। বিষয়টির খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।