চার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কে দুর্ভোগ-ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না। বিভাগীয় ও জেলা শহর সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগের বিকল্প এ সড়কের সংস্কার কাজ নিয়ে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তিন উপজেলার লাখো মানুষ।
চার বছর পর সড়ক সংস্কারের কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলেও করোনার অজুহাতে গত মার্চ থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে সড়কের খানাখন্দ ও গর্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের চেয়ে ভোগান্তি বেড়েছে।
সংস্কার কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে উপজেলা প্রকৌশল অফিস। আগামী ডিসেম্বরে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রায় এক বছরে ২০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে সোয়া ৪ কোটি টাকায় বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কের প্রথম চার কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মেসার্স রাশিদুজ্জামান পিটার নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করে। একই বছরের অক্টোবরে সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হয়। সড়কের এক কিলোমিটার অংশের মেকাডম শেষ করতে সময় লেগেছে ছয় মাস। গত মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের সংস্কার হওয়া অংশসহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তার পাশে ইট ফেলে রাখায় শুধু অর্ধেক রাস্তা দিয়ে যান চলাচল করছে। বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত এবং রাস্তার পাশে কেটে রাখা নালায় পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। গর্তগুলো দেখলে মনে হয় একেকটি পুকুর। সড়কজুড়ে রয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ।
দুর্ভোগের বর্ণনা দিতে গিয়ে অটোরিকশার যাত্রী মারুফ আহমদ বলেন, দুই জায়গায় গর্তে পড়ে গাড়ি বন্ধ হয়েছে এবং গর্ত থেকে ঠেলে তুলেছি। গত কয়েক বছর থেকে এই নিয়মেই চলছে আমাদের যানবাহন। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি নিয়ে দায়িত্বশীলদের অবহেলা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালির কারণে আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। অটোরিকশা চালক জাকির হোসেন বলেন, প্রায় প্রতিদিনই গাড়ি নিয়ে গ্যারেজে যেতে হয়। সারাদিনের রোজগার গাড়ি মেরামত করেই শেষ হয়ে যায়। এভাবে চলতে থাকলে গাড়ি বন্ধ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়ক সংস্কার কাজ শেষ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কাজ যে গতিতে চলছিল তাতে নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়ার কথা; কিন্তু করোনা দুর্যোগের কারণে কাজ বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, করোনার কারণে লোকবল সংকটের কথা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।