করোনার উচ্চ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বিয়ানীবাজার উপজেলায় কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ১০টি গরুর হাট বসছে। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। হাটে হাটে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতা। পশুর হাট পরিচালনায় সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। তবে বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন হাটে সে আদেশ নিষেধ পুরোপুরি উপেক্ষিত।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার দুবাগ বাজারের স্থায়ী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। হাটে আসা কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। গাদাগাদি করে বসেছে পশুর হাট। মুখে মাস্ক তো দূরের কথা, একে অপরের সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে হাটে প্রবেশ করেছে। ইজারাদারের পক্ষ থেকে সুরক্ষাব্যবস্থা নেই, প্রবেশপথে রাখা হয়নি হাত ধোঁয়ার পানি ও সাবান। শরীরের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র নেই। হাটজুড়ে রয়েছে শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষের অবাধ চলাচল।

আলমগীর কবির নামে একজন ক্রেতা বলেন, কোরবানির জন্য গরু কিনতে এসেছি। কিন্তু হাটে তো কোনো স্বাস্থ্যবিধি নেই। এত মানুষ দেখে ভয়ও লাগছে। পুরো হাটে মানুষে মানুষে একাকার। যেহেতু লকডাউন নেই, তাই হাটে-বাজারে মানুষ বেড়েছে। তিনি বলেন, প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত। তা না হলে ঈদের পর হাসপাতালে জায়গা খুঁজতে খুঁজতে অনেককে তার প্রিয়জন হারাতে হবে।
রুনু মিয়া নামে একজন বিক্রেতা বলেন, পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানবে কিভাবে? স্বাস্থ্যবিধি মানতে হলে হাটের জন্য বড়সড় জায়গার প্রয়োজন। একেতো জায়গা কম, খালি স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বললেই তো হবে না। ছোট জায়গায় মানুষ বেশি। তাছাড়া মানুষ যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানে প্রশাসন কী করবে?
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিয়ানীবাজার উপজেলায় করোনা রোগী সংখ্যা ৬৮২জন। এর মধ্যে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। করোনা উপসর্গের রোগী গ্রামের ঘরে ঘরে। অথচ এখনও সচেতনতা আসছে না সাধারণ মানুষের মধ্যে। ১৫ জুলাই থেকে লকডাউন শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এর পরপরই মানুষের ঢল নামে হাট-বাজারে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবার বিয়ানীবাজার পৌরসভাসহ উপজেলায় ৫টি স্থায়ী হাটে হবে কোরবানির পশুর হাট বসবে। স্থায়ী হাটের পাশাপাশি পাঁচটি অস্থায়ী হাটেরও অনুমতি প্রদান করেছে প্রশাসন। করোনা ভাইরাসের এ মহামারিকালে সহজেই পশু কেনাবেচার জন্য প্রশাসন পাঁচটি অস্থায়ী হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এ সব হাটগুলো হচ্ছে পিএইচজি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, ছোটদেশ-ফেনগ্রাম ত্রিমোহনী (ওয়াব আলীর দোকান), মাথিউরা, তিলপাড়ার দাসউরা বাজার ও আছিরগঞ্জ বাজার। এছাড়া স্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে রামদা বাজার, চারখাই বাজার, দুবাগ বাজার, বৈরাগীবাজার ও বারইগ্রাম বাজার।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক নূর বলেন, জনসাধারণের সুবিধার কথা চিন্তা করে প্রশাসন অস্থায়ী হাটের অনুমতি প্রদান করেছে। স্থায়ী হাটের পাশাপাশি এ পাঁচটি হাটেও পশু বিক্রি করা হবে। তিনি বলেন, কোন অবস্থায় প্রশাসনের অনুমোদিত হাটবাজারের বাইরে সড়কে কিংবা ছোট বাজারে কেউ অবৈধভাবে হাট বসানোর চেষ্টা করলে উচ্ছেদের পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।