‘মৃত্যুর পরের জীবনটাই মূল্য বহন করে মনুষ্য জীবনের। সত্যটাও উপলব্ধি হয় জীবনের পরে। মৃত্যুর পরেও যে জীবন ও কর্ম বেঁচে থাকে সেটাই প্রকৃত জীবন। আমরা যারা তাঁকে কাছ থেকে দেখেছি, তারাই শুধু বুঝতে পেরেছি কোন এক অজানা অস্থিরতায় এই মানুষটি চাইতেন সমাজের সবাই ভালো থাকুক। কারোর কিছু করার জন্য তিনি যেন মুখিয়ে থাকতেন সবসময়। সমাজ ও সমাজের মানুষের তরে অকাতরে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন ক্ষণজন্মা এই মানুষটি। এমন সবাই নয়, এমন হওয়াও অতো সহজ নয়। এ কারণেই তিনি পঞ্চখণ্ড তথা বিয়ানীবাজারের এক ক্ষণজন্মা সূর্যসন্তান।’
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান, বিয়ানীবাজারের কৃতিসন্তান অধ্যাপক এ কে এম গোলাম কিবরিয়া তাপাদার স্মরণে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিয়ানীবাজারবাসীর উদ্যোগে গত সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় নিউইয়র্কের আল মদিনা পার্টি হলে আয়োজিত এক শোকসভায় তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণকালে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরও বলেন, ‘অধ্যাপক এ কে এম গোলাম কিবরিয়া তাপাদার ছিলেন এক প্রবল কর্মযজ্ঞের কাণ্ডারি। সমাজ ও সমাজের মানুষের কল্যাণে নিজের মেধা, শ্রম আর ভালবাসা দিয়ে তিনি সমাজের মানুষদের চিরঋণী করে রেখে গেছেন। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে সত্য ভাষণে সততা আর সত্যের পথে অবিচল থাকার প্রেরণা। এই মানুষটি সব সময়ই ছিলেন আন্তরিক, মমতাপূর্ণ ও স্নেহার্দ্র। তাঁর কর্মস্পৃহা বুকে নিয়ে, মাটি ও মানুষের সেবার মানসিকতা ধারণ করে যদি আমরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারি, তবে তাই হবে এই মহান ব্যক্তির প্রতি যোগ্য সম্মান প্রদর্শন।
সভায় বিয়ানীবাজারের ভূমিপুত্র অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া তাপাদারের কর্মজীবন, মেধা-প্রজ্ঞা ও তার সাথে নানা স্মৃতিরোমন্থন করে বক্তারা আরও বলেন, তিনি তার কর্মদক্ষতা, মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে শুধু নিজেকে নয়, দেশ ও প্রবাসে বিয়ানীবাজারকে উপস্থাপন করেছেন। তার কথার মাধুর্য যে কোন শ্রোতাকে আকৃষ্ট করতো। তার প্রতিটি কথা ছিলো শিক্ষনীয়, ইতিহাস ও পর্যালোচনাভিত্তিক।
যুক্তরাষ্ট্রস্থ বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এবং জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার কোষাধক্ষ্য মো. আলিম ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আব্দুল হাছিবের যৌথ পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল খান, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য ও এবি মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক আজিমুর রহমান বোরহান
বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি বোরহান উদ্দিন কফিল, সমিতির সাবেক সভাপতি ও এবি মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক মাসুদুল হক ছানু, সমিতির সাবেক সভাপতি ও এবি মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ সোসাইটির সহ সভাপতি ফারুক আহমেদ চৌধুরী, মাথিউরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান খান, জালালাবাদ এসোসিয়েশনর সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম, সহ সাধারণ রোকন হাকিম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনীতিবিদ খলিলুর রহমান, নিউইয়র্ক প্রগ্রেসিভ ফোরামের সভাপতি হাফিজুল হক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বদরুল হক।
সভায় সদ্য প্রয়াত পঞ্চখণ্ডের শিক্ষা ও সমাজহিতৈষী ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক এ কে এম গোলাম কিবরিয়া তাপাদারের পরিবারের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মরহুমের সহোদর গোলাম মোর্তজা। এসময় তার আবেগঘন বক্তব্যে পুরো হলজুড়ে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাহি উদ্দিন, প্রফেসর কামাল চৌধুরী, আব্দুল নূর, হাফিজুর রহমান হীরা, হেলাল উদ্দিন, আব্দুল কুদ্দুস টিটু, নজমুল হক মাহবুব, কমর উদ্দিন, জাহেদ আহমদ, সারোয়ার হোসেন, রেজাউল আলম অপু, অনিক রাজ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা রফিক উদ্দিন পরে মরহুমের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনর সাবেক সহ সভাপতি মওলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকী।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফয়জু মিয়া, আব্দুস খান মাখন, মিছবাহ আহমদ, জয়নাল আবদিন, আব্দুস শুক্কুর, মোঃ তুলন, সমির উদ্দিন, সামছুল আবদিন, শামীম আহমদ, ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, আমিনুল হোসেন, আতিকুল ইসলাম আসাদ, সাব্বির আহমদ, হাসান আহমদ, বিলাল আহমদ চৌধুরী, আবুল ফজল লিটন, আব্দুল হামিদ, নূর উদ্দিন, মো.কমর উদ্দিন, ফয়ছল আলম প্রমুখ।