বর্ণিল আয়োজনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনেস্কোর সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ দূতাবাস প্যারিস-ফ্রান্সের উদ্যোগে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।

দিবসটির এবারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘Safeguarding Indigenous Languages for Promoting Multilingualism through Transforming Education’। যার মাধ্যমে জাতিসংঘ ঘোষিত International Decade of Indigenous Language-এর প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোর স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যের খন্দকার এম তালহা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মাতৃভাষার ইতিহাস এক রক্তাক্ত বেদনার ইতিহাস। বিশ্বে বাংলাদেশের ৮০টি কূটনৈতিক মিশনে স্থানীয় কমিউনিটিকে সঙ্গে নিয়ে দিবসটি উদযাপনের মাধ্যমে মাতৃভাষার গুরুত্বকে তুলে ধরে আসছেন সবাই। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্রমাগত মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে এছাড়া বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু এখনো তাদের মাতৃভাষায় লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।’
এ বিষয়ে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান তিনি।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনের পাশাপাশি ‘বহুভাষাবাদ’ এবং ‘ভাষার প্রতি ভালবাসা’ প্রতিপাদ্যের ওপর দূতাবাস নির্মিত একটি অংশগ্রহণমূলক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। যেখানে ইউনেস্কোতে নিযুক্ত ৩৩টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা তাদের নিজ নিজ ভাষার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করেন।
বাংলাদেশসহ ভারত, চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল, উজবেকিস্তান, শ্রীলংকা, সার্বিয়া, আজারবাইজান, ইউক্রেন, ইন্দোনেশিয়া এবং সৌদি আরবের শিল্পীরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমন্ত্রিত অতিথিদের মাতিয়ে রাখেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে।