বঙ্গোপসাগরে আবারও একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি ২৩-২৪ অক্টোবরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডানা’। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগে আঘাত হানতে পারে। রোববার (২০ অক্টোবর) আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেল থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ সময় চট্টগ্রাম, সিলেট ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব এলাকায় বৃষ্টি ও ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া মডেল থেকে জানা গেছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে, যা ঘূর্ণিঝড় আকারে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ আগামী ২৩ অক্টোবর রাত ১২টার পর থেকে ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে সরাসরি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসাবে স্থলভাগে আঘাত করার প্রবল সম্ভাবনা আছে। স্থলভাগে আঘাতের সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার; দমকা হাওয়া সহ যা ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি যদি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত হানে তবে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ থেকে ৮ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ভাটার সময় আঘাত হানলে এসব এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ক্রমেই ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে। আগামী ২৩ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়টির সৃষ্টি হবে।
আইএমডি সবশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরের ওপরে তৈরি হবে নিম্নচাপ। সেই সিস্টেমটি মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর বুধবার (২৩ অক্টোবর) পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগরেই সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলু রশীদ বলেন, লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এবং এর গতিপথ বলছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানলে বাংলাদেশের খুলনার দিকে আঘাত হানারও সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫ তারিখের দিকে উপকূলে আঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে সময় কম পাচ্ছে। তাই এর গতিবেগ খুব বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। খুব বেশি শক্তিশালী হবে না ঘূর্ণিঝড়টি।