শখের বসে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন বাড়িটি এখন অনেকটা পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন এই বাড়ি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন মানুষ। শুধু বাড়ি নয়, আশপাশের সবুজ শ্যামল দৃশ্য, নীরব-নিস্তব্ধ পরিবেশ ও প্রকৃতি, ফল-ফুলের বাগান আর পাখ-পাখালির কিচির মিচির শব্দ যে কাউকে মুগ্ধ করবে।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিজবাহাদুর ইউনিয়নের সোনাই নদী তীরবর্তী দৌলতপুর গ্রামে বাড়ির অবস্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদে অবস্থিত বাড়িটির নাম তমছির আলী বাংলো বাড়ি। প্রতিনিয়তই বড়লেখাসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসেন বাড়িটিকে দেখতে।

দৌলতপুর গ্রামের মরহুম তমছির আলীর ছয় ছেলে সন্তানের পাঁচজনই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। মূলত স্বপরিবারে দেশে বেড়াতে এসে অবসর সময় কাটাতে অনেক যত্ন করে পুরাতন বাড়িটিকে নতুন ও দৃষ্টিনন্দন আকৃতি দিয়ে গড়ে তুলেছেন তারা। সবুজ গাছগাছালি দিয়ে সাজানো বাড়িটির মূল আকর্ষণ হচ্ছে আগেকার সময়ের জমিদারি আদলের বসবাসের ঘর। তবে ঘরটির মেঝে ও দেয়ালে ইট-পাথর আর আধুনিকতার ছোয়া থাকলেও উপরের অংশে ছাউনি হিসেবে লাগানো হয়েছে চৌচালা টিনশেড। তাছাড়া বাড়ির চারপাশে গড়ে তোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ অনেক বেশি মনোমুগ্ধকর। ফল আর ফুলের গাছগাছালি দিয়ে সাজানো হয়েছে বাড়ির পুরো আঙিনা। যা ভ্রমণপিপাসু মানুষদের মনকে আকৃষ্ট করে তোলে। প্রতিটি ছুটির দিনে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে বাড়িটিতে।

মরহুম তমছির আলীর ছোট ছেলে নাজিম উদ্দিন পেশায় একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। তিনি সিলেট শহরে বসবাস করলেও পৈত্রিক ভিটায় নির্মিত বাড়িটি দেখভাল করতে প্রতিনিয়ত ছুটে আসেন সেখানে। তিনি জানান, বিভিন্ন এলাকার মানুষজন অবসর সময় কাটাতে ছুটে আসেন তার বাড়িতে। তাদের সাথে কাটানো সময়টা তিনি নিজেও অনেক উপভোগ করেন।

সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত করা হয়েছে। যাতে মানুষ এখানে এসে কোলাহলময় জীবনে প্রবেশ করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে। বাড়িটিকে ঘিরে নানান পরিকল্পনার কথাও জানান নাজিম উদ্দিন।

এই বাড়িতে বেড়াতে এসে মুগ্ধ পার্শ্ববর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলার একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি জানান, সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীরা বাড়ি বিলাসী। প্রাশ্চাত্যের চাকচিক্যে বসবাস করলেও তারা সবসময় দেশ ও মাটির টানে ছুটে আসেন শিকড়ে।

গ্রামীণ জনপদে এমন দৃষ্টিনন্দন বাড়ি সচরাচর চোখে পড়ে না। প্রকৃতির সাথে অবসরে এখানে ছুটে আসলে সকল ক্লান্তি যেন নিমষেই দুর হয়ে যাবে- এমন মত দর্শনার্থীদের।