ভারতে যাওয়ার সময় সীমান্তে বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে সীমান্ত থেকে আটক করা হয়।

জানা যায়,সিলেটের কানাইঘাট দনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টাকালে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বিজিবি।

বিজিবির সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজিবির ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসাদুন নবী বলেন, ‘অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় দনা সীমান্ত থেকে আমরা তাকে আটক করেছি। উনাকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। খুব শিগগিরই সংবাদমাধ্যমকে প্রেসনোট পাঠিয়ে জানানো হবে।’

এবিষয়ে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, বিজিবি এখনো আমাদেরকে কিছু জানায়নি। আমরাও আপনাদের মতো খবর পেয়েছি।

তাকে বিজিবি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার নাজিম উদ্দীন।

এর আগে, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় সাবেক এই বিচারপতির বিরুদ্ধে নোয়াখালীর আদালতে মামলা করা হয়েছে। গত সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসান পলাশ বাদী হয়ে নোয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলি আদালতে মামলাটি করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন সাবেক বিচারপতি মানিক। তিনি বলেছিলেন, ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, ছিলেন পাকিস্তানের চর’। জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক পরিচয়ে মিথ্যাচারসহ কালিমা লেপনের হীন উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে মানহানিকর বক্তব্য দেন তিনি। যা প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। তার এমন মন্তব্যে জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।

১৯৭৮ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন জীবন শুরু করা শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ২০০১ সালে তাকে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক করে নেয় সরকার। কিন্তু পরে বিএনপি সরকার এসে তাকে বাদ দেয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর হাইকোর্টের একটি রায়ে বিচারকের আসনে ফেরেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ২০১৩ সালে তাকে পদোন্নতি দিয়ে আপিল বিভাগের বিচারক করা হয়।

২০১৫ সালে অবসরে যাওয়ার আগে তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে বার বার শিরোনাম হয়েছেন বিচারপতি মানিক। সে সময় তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছিলেন।

অবসরের পর তাকে নিয়মিত টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে দেখা যেত। বরাবরই তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন।