ঈদুল ফিতরের দিন বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান প্রাকৃতিক ঝর্ণা মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড় জমেছে। ঈদের নামাজের পর থেকেই আনন্দ উপভোগে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকের আনাগোনায় মাধবকুণ্ড এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে।
পর্যটন পুলিশ, বনবিভাগ আর থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারিতে আগতরা সন্ধ্যা অবধি নির্বিঘ্নে আনন্দ উপভোগ করেছেন। পর্যটকদের উপস্থিতিতে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মুখেও হাসি ফুটেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকার প্রকৃতিপ্রেমীরা যানবাহনে মাধবকুণ্ডে ছুটে এসেছেন। দুপুরের পর থেকে উপচেপড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠে জলপ্রপাত এলাকা। দূর-দূরান্তের প্রকৃতিপ্রেমীর সংখ্যা কম হলেও স্থানীয় লোকজনের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষের পদচারণ, হৈ-হুল্লোড় আর নাচ-গানে আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আনন্দের মুহূর্তটি ক্যামেরায় ধরে রাখতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে নানা বয়সী মানুষকে।
উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর এলাকা থেকে আগত জাফর আহমদ, মৌলভীবাজার থেকে আগত সুমন আহমদ প্রমুখ জানান, বেশ কয়েক বছর ধরেই তারা ঈদের দিন মাধবকুণ্ডে বেড়াতে যান। গত ঈদ পর্যন্ত তেমন লোকজনের আনাগোনা দেখেননি। এবার যেন মাধবকুণ্ডে ঈদ-আনন্দ উপভোগে লোকজন হুমড়ি খেয়েছেন। তবে বনবিভাগ ও পর্যটন বিভাগ পর্যটকের বিনোদনের জন্য মাধবকুণ্ডে নতুন কোনো কিছু সংযোজন করেনি। ফলে একই জিনিস বারবার উপভোগ করতে হচ্ছে।
মাধবকুণ্ড ইকোপার্কের প্রধান ফটকের ম্যানেজার সাজু আহমদ জানান, সকাল ১০টা থেকেই মাধবকুণ্ডে লোকজন আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকের আগমনও বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক মাধবকুণ্ডে প্রবেশ করেছেন। ব্যাপক পর্যটকের আগমনে মাধবকুণ্ডের ব্যবসায়ীদের মুখেও হাসি ফুটেছে।
মাধবকুণ্ড পর্যটন পুলিশের ইন্সপেক্টর ফয়সল আতিক জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে মাধবকুণ্ডের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পর্যটন পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারির কারণে এখানে কোনো ধরণের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই স্থানীয় ও দূরের পর্যটকরা আনন্দ উপভোগ করে বাড়ি ফিরেছেন। ঈদের ছুটি ও পহেলা বৈশাখে মাধবকুণ্ডে ব্যাপক পর্যটকের আগমন ঘটার সম্ভাবনাকে মাথায় রেখেই থানা পুলিশ ও পর্যটন পুলিশ মাধবকুণ্ডে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস জানান, মাধবকুণ্ডে আগত পর্যটকের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য বন বিভাগ ব্যবস্থা নিয়েছে। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এবার ঈদের দিন রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। আরও কয়েকদিন তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা করছেন।